আজ সকালে দিল্লি থেকে সরাসরি চোপড়া আসছেন বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ সকাল ১০ টায় বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামবেন রাজ্যপাল ৷ তারপর সোজা চোপড়া যাবেন তিনি। রাজভবন সূত্রে খবর, চোপড়ার নির্যাতিতা মহিলার সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলবেন সিভি আনন্দ বোস ৷ এখনও পর্যন্ত সফরসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গ থেকেই ফের সোজা দিল্লিতে ফিরবেন রাজ্যপাল। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় সরকারকে রিপোর্ট দেবেন তিনি।
সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে দিল্লি থেকে বাগডোগরার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন রাজ্যপাল। বাগডোগরা থেকে সড়ক পথে চোপড়া পৌঁছবেন তিনি। এখান থেকে কোচবিহারের দিনহাটাতেও রাজ্যপাল যেতে পারেন বলে রাজভবন সূত্রের খবর।আপৎকালীন বা জরুরি ভিত্তিতে কোনও কাজ না থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁর কলকাতায় ফেরার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও জানা গিয়েছে । ইতিমধ্যেই চোপড়ার ঘটনায় রাজ্যের থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন বোস।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়াতে এক যুবতীকে জনসমক্ষে বেধড়ক মারধরের অভিযোগে শিউরে উঠেছে বাংলা। চোপড়ার ঘটনায় সোমবারই রাজ্যের থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল। আর এবার দিল্লি থেকে ফিরেই প্রথমেই উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন তিনি। জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি ইতিমধ্যেই কোচবিহারে গিয়ে আক্রান্তের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রসঙ্গত, চোপড়ার ঘটনার আঁচ বাংলার সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে দিল্লির রাজনীতির অলিন্দেও। সরব হয়েছেন জে পি নাড্ডা থেকে শুরু করে বিজেপির প্রথম সারির নেতারা।
রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, চোপড়ার ঘটনা নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়য়ের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন। রিপোর্টে জানতে চাওয়া হয়েছে কোথায়, কবে এই ঘটনা ঘটেছে? ঘটনার ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? ঘটনার সময় পুলিশের ভূমিকা কী ছিল? ইত্যাদি নানা বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এদিকে চোপড়ার ঘটনায় সোমবার বিধানসভার সিঁড়িতে বসে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। সোমবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডা. বিধান রায়ের জন্ম-মৃত্যুদিন উপলক্ষে নির্দিষ্ট কর্মসূচি ছিল। তার মাঝেই চোপড়ার আঁচ গিয়ে পড়ে বিধানসভাতেও। চোপড়ার ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে শাসক দল। আর চোপড়া ইস্যুকে কেন্দ্র করে তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিজেপি। পরিস্থিতি সামলাতে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করা হয়েছে ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে। প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি নিশানা করেছেন, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা।
যুগলকে নির্মমভাবে মারধরের ঘটনায় রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে নিন্দা করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা বলেছেন, ‘এই রাজ্য মহিলাদের জন্য নিরাপদ নয়’। তিনি আরও বলেছেন, সন্দেশখালি, উত্তর দিনাজপুর বা রাজ্যের অন্য কোন জায়গা, দিদির পশ্চিমবঙ্গ মহিলাদের জন্য নিরাপদ নয়। তালিবান রাজে পরিণতি হয়েছে বাংলা। তৃণমূল বিধায়ক, নেতা কেউ এই বিষয়ের প্রকাশ্যে নিন্দা জানাচ্ছেন না। এর থেকে এটাই স্পষ্ট বাংলায় ‘তালিবানি শাসন’ চলেছে। বাংলার এই ঘটনা শরিয়া আইনের নিষ্ঠুরতার কথাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। গোটা দেশের মাথা এই ঘটনা হেঁট হয়ে গিয়েছে।’