বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পোস্ট করা ‘গোপন চিরকুট’কে কেন্দ্র করেই দক্ষিণ দিনাজপুরে হইচই। শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। নিয়োগ দুর্নীতি এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা তুলে ধরতে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি চিরকুট পোস্ট করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। আর এই চিরকুট পোস্ট হতেই ভাইরাল শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলায়। ঘটনায় তদন্তের কথা বলছেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির রিজিওনাল ম্যানেজার। সুকান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে তৃণমূল।
সম্প্রতি একটি চিরকুট ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে (সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় অনলাইন)। সেখানে ওই দপ্তরে অর্থের বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ওই চিঠি (চিরকুট) বানানো হয়েছে বলে দাবি WBSEDCL-এর স্টেশন ম্যানেজারের।
ওই চিরকুটে কয়েকজন তৃণমূল নেতার নির্দেশে বিপুল অর্থের বিনিময়ে চাকরি এবং এক বিজেপি নেতা সুশীল মার্ডির বিরুদ্ধে মিথ্যা বিদ্যুৎ চুরির মামলা রুজু করা হয়। ভাইরাল চিঠিটি বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার নিজেও তাঁর এক্স হ্যান্ডলে শেয়ার করেন।
সেই চিঠিতে কুমারগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা চেয়ারম্যান তোরাফ হোসেন মণ্ডল এবং তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মফিজউদ্দিন মিঁয়ার নাম উল্লেখ রয়েছে। ওই চিঠিতে কুমারগঞ্জ বিদ্যুৎ দপ্তরের স্টেশন ম্যানেজার নাজিমুল হকের সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে। চাকরির জন্য ৬ লক্ষ ৫২ হাজার টাকার লেনদেন করা হয় বলেও চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তরের স্টেশন ম্যানেজার নাজিমুল হক দাবি করেছেন, সিল ও সই জাল করে চিঠিটি বানানো হয়েছে। এর কোনও সতত্যা নেই। যাঁর নাম বলা হচ্ছে, তাঁর নামে কোনও অভিযোগই হয়নি। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মফিজউদ্দিন মিঁয়া পুরো বিষয়টিকে ‘চক্রান্ত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, ‘চিঠিটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। সুকান্ত মজুমদার ইচ্ছাকৃতভাবে সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। আমি তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সুকান্ত তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘কী ভাবে একটি স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং বিধায়কের সুপারিশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীর উপর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে বিদ্যুৎ চুরির মিথ্যা কেস দেওয়া হয় এবং বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দপ্তরে টাকা পৌঁছে দিয়ে নিয়োগ করা হয়, তা সামনে আসা দরকার। না হলে এই দুর্নীতি এবং প্রতিহিংসামূলক আচরণের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেব।’
তবে বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন WBSEDCL-এর ওই আধিকারিক। দক্ষিণ দিনাজপুরের WBSEDCL-এর রিজিয়নাল ম্যানেজার শুভময় সরকার সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি ওই আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অভিযোগটি মিথ্যে বলে দাবি করেছেন। উনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন। তাঁরাও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানান।