Darjeeling Temperature: এ কোন দার্জিলিং। চড়া রোদ, সোয়েটার মাফলার দূর অস্ত, গায়ে সাধারণ জামা রাখতেও যেন অস্বস্তি হচ্ছে। সমতলের মতো না গরম না হলেও চেনা দার্জিলিংয়ের শান্তি কোথায়? সেপ্টেম্বরে দার্জিলিং ও পাহাড়ের গড় তাপ তাপমাত্রা থাকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ছাপিয়ে এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করে গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা অস্বাভাবিক তো বটেই, যাঁরা সমতল ছেড়ে দু'দণ্ড শান্তি ও আরামের খোঁজে গিয়েছিলেন তাঁরা হতাশ।
ফাঁকা ম্যালে ভিড় তো নেইই। স্থানীয়রাও যেন উধাও হয়ে গিয়েছেন। রোদের তাপে কেই বা বাইরে থাকে। পর্যটক যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা হোটেলেই কাটাচ্ছেন নতুবা গাড়িতে চড়ে সাইট সিন করছেন বটে, তবে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হয়ে। দার্জিলিং সুলভ স্বস্তি নেই।
শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া দফতরের তথ্যে স্পষ্ট হল, এদিন দার্জিলিং ভেঙে দিয়েছে সেপ্টেম্বরের নিরিখে ১৯৭৩ সালের রেকর্ড। ওই বছর ৩ সেপ্টেম্বর দার্জিলিংয়ের রাজভবনের রেকর্ডে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। এদিন তা ভেঙে দার্জিলিং পৌঁছে গিয়েছে ২৮.২-এ। একটুর জন্য বেঁচে গেল ১৯৭০ সালের ২১ অগাস্টের সর্বকালীন (২৮.৫) রেকর্ড। তবে তা কতদিন থাকবে, সেটাই বড় প্রশ্ন। শুধু দার্জিলিং নয়, এদিন ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরের রেকর্ড (২৭.১) প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছিল গ্যাংটকও। এই শহরের তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ২৬.৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে। অর্থাৎ দুই রাজ্যের দুই পাহাড়ই এদিন হাঁসফাঁস করেছে।
মার্চের শেষ থেকেই এ বার তাপমাত্রা চড়তে শুরু করেছিল বাংলায়। এপ্রিলে সেটা চরম আকার নেয়। ওই সময়ে দক্ষিণবঙ্গে টানা ২২ দিন তাপপ্রবাহ চলেছিল। এপ্রিলে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছয় — ৭৪ বছরে সর্বোচ্চ। সল্টলেকে টানা ১৭ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে ছিল। মে-র মাঝামাঝি থেকে অবশ্য তাপমাত্রা সামান্য হলেও কমে যায়। ওই সময়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গাতেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি পার করে। যদিও দার্জিলিংয়ের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওই সময়ে নতুন কোনও রেকর্ড করেনি।
চার মাস পর সেপ্টেম্বরের শেষ বেলায় এসে বাকি বাংলা পারদের উত্থানের নিরিখে যখন অনেকটাই ‘ঠান্ডা’, বেশির ভাগ জায়গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে — তখনই প্রকৃতির ‘টুইস্ট ইন দ্য টেল’। বেনজির উচ্চতায় দার্জিলিংয়ের তাপমাত্রা — ৭৪ বছরে দ্বিতীয় উষ্ণতম দিন। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সে ভাবে না-চড়লেও ভ্যাপসা গরমের দিনে-রাতে জেরবার হতে হচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলছেন, ‘সোমবার থেকেই অবস্থার বদল শুরু হবে। তাপমাত্রা হ্রাস পেয়ে স্বস্তি ফিরতে পারে বুধবার।‘ এখন সেই আশাতেই বুক বাঁধছে সমতল থেকে পাহাড়।