মালদায় রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে গঙ্গা ও ফুলহর। দুর্গত এলাকায় ত্রাণের জন্য হাহাকার অবস্থা। ফরাক্কায় গঙ্গা নদী ক্রমেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করছে। রবিবার গঙ্গা বিপদসীমার ১.৩৮ মিটার ওপর দিয়ে বইছে। এদিকে বৈষ্ণবনগরে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। গঙ্গা তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। এনডিআরএফ ও পুলিশ ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালাচ্ছে। বৈষ্ণবনগর ব্লক প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিশেষ টিম গঠন করে নজরদারি চালানো হচ্ছে।
গত কয়েক দিনে গঙ্গা ও ফুলহর নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি এলাকায়। দুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। কোথাও হাঁটুজল, আবার কোথায় কোমরের বেশি। বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে অনেকে উঁচু জায়গা অথবা বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন।
প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দুই গ্রাম পঞ্চায়েত মিলে ১০-১২টি বুথ জলমগ্ন। তবে বেসরকারি মতে, জলমগ্ন বুথের সংখ্যা অনেক বেশি। মহানন্দটোলার মুলিরামটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুর্গতদের জন্য কমিউনিটি কিচেন খোলা হয়েছে। দুর্গতদের অভিযোগ, কান্তটোলা, শ্রীকান্তটোলা ও মুলিরামটোলার দুর্গতরা সবরকম সুযোগসুবিধা পাচ্ছেন। তবে অন্য বুথের মানুষ কোনওরকম সরকারি সহযোগিতা পাচ্ছে না। রতুয়ার মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজকিশোরটোলায় চৌকিতে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। তবে জল আরও বাড়লে সেই আশ্রয়টুকুও আর নিরাপদ থাকবে না। এদিকে গঙ্গার জল এভাবে বাড়তে থাকলে বৈষ্ণবনগরের পার লালপুর, শোভাপুর, বাখরাবাদ, পারদেওনাপুর, দৌলতহাট, লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত, কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা, সামশেরগঞ্জ, সুতি সহ সংলগ্ন গ্রামগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এদিকে রবিবার খানিকটা জল নেমেছে ডুয়ার্সের বীরপাড়ার ভুটান সীমান্তের জয়বীরপাড়া, ঢেকলাপাড়া ও বান্দাপানি চা বাগান সহ কালাপানি বস্তি এলাকায়। অন্তত ২০ হাজার মানুষ খানিকটা স্বস্তিতে। শনিবার সকালে মরা নদীতে হঠাৎ হড়পা বান এসে যাওয়ায় আচমকা প্রবল জলস্রোত বইতে থাকে। যেখানে মানুষ তো দূর গাড়ি নামতে সাহস পায়নি। ফলে জলবন্দি হয়ে থাকতে হল এতগুলি লোককে। বিকল্প বন্দোবস্ত? নেই। ফলে উপায়ও নেই। জরুরি কাজ, চিকিৎসা সংক্রান্ত ইমার্জেন্সি সব লাটে উঠেছিল।