কোচবিহারকে কেন্দ্রশাসিত এলাকা করার কথা দিয়েছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকার! এমনটাই দাবি করেছেন, গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের (জিসিপিএ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অনন্তদেব বর্মার তথা অনন্ত মহারাজ। তাঁর দাবি এখন শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণার অপেক্ষা। শুধু ঘোষণাই নয় সেই রাজ্যের ক্ষমতা দেওয়া হবে তাঁদের হাতেই বলে দাবি অনন্ত মহারাজের। শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জের পাঘালুপাড়ার মাঠে একটি সভায় তিনি বক্তব্য রাখতে উঠে এ কথা জানান। যা নিয়ে গোটা উত্তরবঙ্গ তো বটেই, রাজ্য়জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে।
কোচবিহারকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে?
অনন্ত মহারাজ আরও বলেন যে, রাজবংশি সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি যে বঞ্চনা হয়েছে তা এখনও ক্ষতিপূরণ হয়নি। তাই সংবিধানের নিয়ম মেনেই কোচবিহারকে ফের আলাদা রাজ্য করার দাবি করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "আমরা হিউম্যান পাওয়ার দেখাই না। তাই বলে আমরা দুর্বল নই।" তিনি কোচবিহারবাসী নিজের অধিকার অর্জনের জন্য তৈরি হওয়ার আহ্বান জানান। অনন্তদেবের দাবি, খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে বলেছেন, কোচবিহারকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হবে। আর সেই অঞ্চলের ক্ষমতা দেওয়া হবে তাঁর হাতেই। এখন সেই অপেক্ষায় রয়েছে কোচবিহারবাসী।
বিরোধিতায় কংগ্রেস ও তৃণমূল
এ নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূল অবশ্য বিরোধিতা করেছে। কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ অধীর চৌধুরীকে বিজেপিকে বাংলাভাগের চেষ্টা করলে আগুন জ্বলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাতে হাত পুড়বে বিজেপির বলেও জানান তিনি। আর বাংলাকে ভাগ হতে দেবেন না বলেও সংবাদমাধ্যমকে জানান অধীরবাবু। অন্য়দিকে তৃণমূলের তরফেও এই দাবিকে নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাভাগের বিরুদ্ধে তাঁরাও রুখে দাঁড়াবেন বলে দাবি করেছেন।
ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার মৃত্য়ু বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান
শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জের সাহুডাঙ্গি এলাকার পাঘালুপাড়ায় জিসিপিএ ‘র উদ্যোগে রাজবংশি সমাজ সংস্কারক রায়সাহেব পঞ্চানন বর্মার ৮৮তম তিরোধান দিবস ও গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের ২৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও দার্জিলিং জেলা সহ বিভিন্ন এলাকার প্রচুর সমর্থক অংশগ্রহণ করেছিল।
সম্প্রতি একাধিকবার পৃথক রাজ্যের দাবি শোনা যায় বিজেপির মুখে
এর আগে বিজেপির উত্তরবঙ্গের সাংসদ-বিধায়করা বারবার উত্তরবঙ্গকে ভাগ করে আলাদা রাজ্যের কথা বলেছেন। যদিও আলাদা কোচবিহারের কথা তাঁদের কারও মুখে শোনা যায়নি। তবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার কথাও তাঁরা তুলেছেন একাধিকবার। তার সঙ্গে অনন্ত মহারাজের দাবির কোনও যোগসূত্র আছে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।