
২০২৬ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘুঁটি সাজিয়ে নিতে এবং গোর্খা ভোটকে এককাট্টা করতে মাস্টারস্ট্রোক হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডের। পাশাপাশি যেন সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বিজিপিএম সভাপতি তথা জিটিএ চিফ অনিত থাপাকেও। ‘গোর্খাল্যান্ড ব্রিজ’ নামে একটি সেতুর উদ্বোধন করে নতুন করে পাহাড়ের ঝিমিয়ে থাকা রাজনীতিকে চাঙ্গা করে দিলেন তিনি।
রবিবার জোরবাংলো-সুখিয়াপোখরি ব্লকের তুংসুন নদীর ওপর স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি একটি সেতুর উদ্বোধন করেন অজয় এডওয়ার্ড। এই অনুষ্ঠানেই তিনি অভিযোগ করেন, বহুবার দাবি জানানো সত্ত্বেও জিটিএ নদীর ওপর সেতু নির্মাণে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘জিটিএ বারবার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কিছুই করেনি। তাই গ্রামের মানুষকে নিয়েই সেতু তৈরি করতে হয়েছে।’’ তবে জিটিএর তরফে পাল্টা দাবি উঠেছে, এ কাজ পুরোপুরি বেআইনি। প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়া কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা নদীর ওপর সেতু তৈরি করতে পারে না।
জিটিএর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শক্তিপ্রসাদ শর্মা সংবাদমাধ্যমকে জানান, পাহাড়জুড়ে নতুন সেতুর প্রয়োজন থাকলেও কাজ ধাপে ধাপে চলছে। বর্তমানে ১৫-১৬টি সেতুর নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে, পর্যাপ্ত অর্থ মিললেই বাকিগুলিও করা হবে। এর আগেও অনুমতি ছাড়া সেতু তৈরির অভিযোগে অজয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জিটিএ সূত্রের দাবি, এ বারও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রায় এক-দেড় বছর আগে ছোট রঙ্গিত নদীর ওপর একটি সেতু তৈরি করেছিলেন অজয়। ওই সেতু দিয়ে পুলবাজার-বিজনবাড়ি ব্লকে বিজনবাড়ি ও সিংতামের মধ্যে যোগাযোগ আরও সহজ হয়। কংক্রিটের ওপর ঝুলন্ত কাচের সেতুও তৈরি করা হয়েছিল। যা পাহাড়ে প্রথম। সে সময়ও জিটিএ দাবি করেছিল, অনুমতি ছাড়া এভাবে নদীর ওপর সেতু নির্মাণ গ্রহণযোগ্য নয়। তবু অজয়ের উদ্যোগে স্থানীয়রা শ্রমদান করে সেতুটি তৈরি করেন। পরে গরুবাথানেও আরেকটি সেতু তৈরি হয় তাঁর উদ্যোগে।
এরপরেই পোখরেবং ও রংবুল ভ্যালির সংযোগ বাড়াতে তুংসুং নদীর ওপর নতুন সেতু নির্মাণ শুরু হয় আট মাস আগে। রবিবার সেই ১৪০ ফুট লম্বা ও ১৪ ফুট চওড়া সেতুর উদ্বোধন করেন অজয় এডওয়ার্ড। গ্রামের মানুষের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে ‘গোর্খাল্যান্ড ব্রিজ’। নাম নিয়েই পাহাড়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। গোর্খা পরিচয় ও আবেগের সঙ্গে যুক্ত শব্দ ব্যবহার করায় অনেকেই মনে করছেন, ভোটের আগে অজয় কার্যত পাহাড়ে নতুন সমীকরণের বীজ বপন করে দিলেন।