সনাতনী প্রতিবাদী সাধু চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর এমনিতেই উত্তাল পরিস্থিতি বাংলাদেশের। এই পরিস্থিতির আঁচ এসে পড়েছে ভারতেও। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের জেলাগুলি থেকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছে একের পর এক বাংলাদেশি নাগরিক। সূত্রের খবর, নাশকতার ছক কষতে বাংলার বিভিন্ন জেলায় গোপন আস্তানা গড়েছে বাংলাদেশি জঙ্গিরা। এর মধ্যে মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত বাংলাদেশি নাগরিকের বিষয়টি নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া হয়েছে প্রশাসনের।
অন্যদিকে, টাকার বিনিময়ে সীমান্ত দিয়ে ভারতে লোক ঢোকাচ্ছ খোদ এদেশের দালালরাই। তারই মধ্যে এবার ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা থেকে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। যে ব্যক্তির কাছ থেকে এইসব মিলেছে তিনি নাকি অস্ত্র কারবারির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর কাছ থেকে ভিন রাজ্যের বাইকও উদ্ধার হয়েছে। আর তারপরেই দানা বেঁধেছে রহস্য। এই ব্যক্তি ইসলামি স্লিপার সেলের জিহাদি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত কিনা, কোনও জায়গায় দুষ্কৃতী কার্যকলাপ করার জন্যই কী তাঁকে পাঠানো হয়েছিল সেই বিষয়ে তদন্ত করে দেখছে কলকাতা এসটিএফ। আর তাঁকে গ্রেফতার করতেই এমন কিছু জিনিস হাতে এসেছে যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে গোয়েন্দাদের।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম রাহেল রানা। বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার মহনপুর শব্দলপুর গ্রামে। ঝাড়খণ্ডের নম্বর প্লেট লাগানো একটি মোটর বাইক নিয়ে মালদহের কালিয়াচক অস্ত্র গুলি প্রচার করতে আসছিল ওই যুবক। কলকাতা এসটিএফ গোপন সূত্রে খবর, পেয়ে মালদার বৈষ্ণবনগর থানা এলাকায় আসে। পিটিএস মোড় এলাকার জিরো পয়েন্টে এরপর এসটিএফ এবং বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ যৌথ ভাবে অভিযান চালিয়ে চালক সহ মোটরবাইকটিকে আটক করে। এরপর তল্লাশি চালিয়ে ধৃতের কাছ থেকে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র, দশটি খালি ম্যাগজিন ও একটি ঝাড়খণ্ডের নম্বরের বাইক উদ্ধার করেছে। এছাড়াও আরও জানা গিয়েছে ধৃত যুবক ঝাড়খণ্ডের অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত।
দক্ষিণ মালদহ জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, মালদহ অস্ত্রাগার হয়ে গেছে। তৃণমূল নেতাকে শেষ করে দেওয়া দিয়ে বছরটা শুরু হয়েছে। তারপর আমরা পরপর পাঁচ থেকে সাতটা এই ধরনের ঘটনা দেখলাম। কিন্তু পুলিশের অদ্ভুত রোল। আবার অস্ত্র সহ ক্রিমিনাল ধরা পড়েছে। পুলিশের বক্তব্য ঝাড়খণ্ড থেকে এরা অস্ত্র নিয়ে এসে, বৈষ্ণবনগর থেকে সারা মালদায় পৌঁছে দিচ্ছে। পুলিশ কিছু করছে না, কারণ তৃণমূল নেতাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যোগাযোগ আছে বা এরা তৃণমূলের সমর্থক কর্মী। এরা ভোটের সময় সন্ত্রাস করবে এই অস্ত্র দিয়ে। সেই কারণে পুলিশ চুপ করে আছে।
ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, আমি যেটুকু জানি বর্ডার এলাকায় ক্রাইম করে এরা। বিএসএফ ধরেনি। আমাদের পুলিশ ধরেছে। তার মানে আমাদের পুলিশ অ্যাকটিভ। মানবিক মুখ্যমন্ত্রী স্টেট বলে দিয়েছেন কোন রং দেখা হবে না কোন ধর্ম দেখা হবে না। যে ক্রিমিনাল তাঁর বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে হবে। জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানান- কলকাতা পুলিশের এস টি এফ এবং বৈষমঙ্গল থানার পুলিশের যৌথ অভিযানে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাচারের পথে অস্ত্র ঝাড়খণ্ডের নম্বর প্লেটের একটি গাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
রিপোর্টার: মিল্টন পাল