
রাজ্যজুড়ে চলছে এসআইআর ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ। ব্লকভিত্তিক কর্মীরা ইতিমধ্যেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি করছেন। এই সময়ই জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের আমবাড়ি এলাকায় ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। মেয়ের নামে ফর্ম না মেলায় মানসিক চাপে ছিলেন এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির পাশের একটি গাছ থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। পরিবারের ধারণা আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা থেকেই তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
মৃতের নাম ভুবনচন্দ্র রায়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এসআইআর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে ফর্ম এলেও তাঁর মেয়ে শিবানী রায়ের নামে ফর্ম আসেনি। এই বিষয়েই গত কয়েকদিন ধরে দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন ভুবনবাবু। নিকটজনদের কাছে বারবার বলছিলেন, এতে তাঁদের কোথাও দেশছাড়া হতে হবে কি না। সেই আতঙ্কই যেন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে ঠেলে দেয় বলে মনে করছেন পরিবার-পরিজনরা।
ঘটনার খবর পেয়ে শোকাহত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ভুবনবাবুর বাড়িতে যান রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, এই ঘটনায় এনুমারেশন ফর্মকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া আতঙ্কই দায়ী। তাঁর দাবি, শুধু আমবাড়িতেই নয়, জেলার আরও কয়েকটি জায়গায় একই ধরনের আতঙ্কে কয়েকজনের অকালমৃত্যু হয়েছে। তিনি পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করেছেন যে শিবানীর নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
অন্যদিকে, ঘটনার পর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি। বিজেপির রাজগঞ্জ ব্লকের আহ্বায়ক নিতাই মণ্ডল বলেন, মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও বিয়ের কারণে নাম বাদ যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল মিথ্যা প্রচার করে মানুষের মধ্যে অকারণ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের রিপোর্ট সামনে এলেই প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে দাবি নিতাইবাবুর।