Malda Youth Suicide: দেশজুড়ে অনলাইন গেম নিয়ে সতর্কতা জারি হলেও বিপদ যেন থামছে না। কয়েক মাস আগেই টাকার বিনিময়ে অনলাইন গেম খেলা আইনি ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ছবিটা অন্য। একের পর এক মানুষ সেই গেমে হারাচ্ছেন অর্থ, শান্তি, এমনকি জীবনও। মালদা জেলার কালিয়াচকে এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল।
রবিবার সকালে কালিয়াচক থানার সিলামপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব বাহাদুরপুর এলাকায় আত্মহত্যা করেন এক যুবক। মৃতের নাম মহম্মদ মনিরুজ্জামান (বয়স ২৯)। পেশায় দিনমজুর ছিলেন তিনি। পরিবারে স্ত্রী ও চার বছরের এক সন্তান। পরিবারের দাবি, টাকার লোভে অনলাইন গেমে জুয়া খেলতে গিয়েই ধ্বংসের পথে হাঁটেন মনিরুজ্জামান।
পরিবারের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে নিয়মিত অনলাইন গেমে টাকা লাগাতেন তিনি। প্রথমে মজার ছলে শুরু হলেও পরে সেটাই নেশায় পরিণত হয়। প্রতিদিনই হারাচ্ছিলেন টাকা। ফলে সংসারে অশান্তি বাড়ছিল। রোজগারের বড় অংশ চলে যাচ্ছিল ভার্চুয়াল গেমের পেছনে।
পড়শিদের কথায়, ‘‘টাকা খুইয়ে মনিরুজ্জামান মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। অনেক সময় একা একা বসে থাকতেন। কারও সঙ্গে কথা বলতেন না।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনলাইন গেমে টাকার জোগান দিতে একাধিক জায়গা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। ফলে দেনার বোঝা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছিল।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাওনাদাররা টাকার জন্য বারবার চাপ দিতে শুরু করেন। হুমকিও আসছিল ফোনে। সেই মানসিক চাপেই শেষ পর্যন্ত জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন মনিরুজ্জামান। রবিবার সকালে বাড়ির ঘরেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় কালিয়াচক থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আর্থিক সঙ্কট ও মানসিক অবসাদেই তিনি এই পদক্ষেপ নেন। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, “সরকার অনলাইন গেম নিষিদ্ধ করলেও মোবাইলে সহজে এসব অ্যাপ ডাউনলোড করা যায়। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই নেশার মতো খেলছে এসব গেম।” তাঁদের দাবি, এই ধরনের ভার্চুয়াল জুয়া পুরোপুরি বন্ধে প্রশাসনের আরও কড়া পদক্ষেপ প্রয়োজন।