Darjeeling Landslide: একদিকে পাহাড়ে শুরু হয়েছে নতুন করে ধস। তাতে বহু রাস্তা ফের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাতে পুজোর পর্যটন ধাক্কা খেতে শুরু করেছে। অন্যদিকে প্রত্যাশিত বোনাস না পাওয়ায় চা শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেছে। গত সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁরা পাহাড়ে বনধ ডাকে। তাতে সাড়া দেয় সাধারণ মানুষও। তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে সব মিলিয়ে পুজোর আগেই বিপাকে পাহাড়ের পর্যটন। এরই মাঝে ফের দার্জিলিংয়ে একটি সেতু ভেঙে যাওয়ার খবর এসেছে।
সম্প্রতি কালিম্পংয়ের একটি ক্লাবের পুজোর জন্য ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পংয়ে বাঁশ-ত্রিপল নিয়ে যেতে রাজি হননি ডেকোরেটার শিল্পীরা। প্রশ্ন উঠছে ডেকোরেটাররা যদি কাজের জন্য রাস্তার ভয়ে পাহাড়ে উঠতে না চান, তবে বেহাল ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে কীভাবে উঠবেন পর্যটকরা? এই প্রশ্নই এখন ধাক্কা খাচ্ছে পাহাড়ের গায়ে। মঙ্গলবার থেকে রাস্তাটি সচল হলেও একাধিক জায়গায় ধসের চিহ্ন, এবড়োখেবড়ো রাস্তা এবং তার জেরে যানজট লেগে থাকায় ভরসা পাচ্ছে না পর্যটন মহল।
ভারী বর্যণের সম্ভাবনায় পর্যটন ব্যবসায়ীদের ভীতিটা আরও বাড়ছে। বুধবারই আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি কালিম্পংয়েও টানা তিনদিন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে। দুই পাহাড়েই দু-একটি জায়গায় ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি যত হবে, ততই বেহাল হবে সিকিমের লাইফলাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তাই কালিম্পংয়ের পুজো-পর্যটন নিয়ে আশঙ্কাটা বেশি। অন্য পথ থাকলেও তা কোনওভাবেই সেরা বিকল্প নয়।
পাহাড়ে গিয়ে আটকে পড়ব না তো, এমন আশঙ্কাও রয়েছে পর্যটকদের মনে। বিশেষ করে সিকিম এবং কালিম্পং নিয়ে ভয় অনেক বেশি। যার মূলে রয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের অবস্থা এবং ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। ভারী বৃষ্টি হলেই পাহাড়ি অঞ্চলে ধস এবং তার জেরে জাতীয় সড়কটির বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা এখন আর অজানা নয় পর্যটকদের কাছে। যে কারণে ভীতিটা যেমন বাড়ছে, তেমনই ভরসা হারাচ্ছে সিকিমের লাইফলাইন।
অন্যদিকে ছোট রঙ্গিত (Rangeet) নদীর প্রবল জলস্রোতে ভেসে গেল কংক্রিটের সেতু। নিজেদের পকেট থেকে টাকা ব্যয় করে দার্জিলিং (Darjeeling) শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে একটি দোলনা সেতুর নীচে এই সেতুটি তৈরি করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন হামরো পার্টির নেতা অজয় এডওয়ার্ড। এই সেতু ভেঙে যাওয়ার ফলে সিংতাম চা বাগান ও পুলবাজার-বিজনবাড়ি এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ নষ্ট হয়ে যায়। তবে জল না থামলে স্থায়ীভাবে এটিকে সংস্কার করা সম্ভব নয় বলে জানা গিয়েছে।
কয়েকদিনের বিরতির পর ফের বিপর্যয় শুরু করেছে দার্জিলিংয়ে। বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। সেই সঙ্গে ধস নামছে নানা জায়গায়। দার্জিলিং শহরে ও দার্জিলিং যাওয়ার পথে ধস নেমেছে একাধিক জায়গায়। ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধেরও। প্রবল বর্ষণের জেরে এবার ভূমিধস দার্জিলিংয়ের রক গার্ডেনের (Rock Garden)-এর রাস্তাতেও। জানা গিয়েছে প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিংয়ে বৃষ্টি হয়েছে ১৬০ মিলিমিটারের কাছাকাছি।
এদিকে চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চের তরফে সিটুর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ফলে সেদিকেও নজর রয়েছে পর্যটকদের। সোমবারের বনধে প্রচুর পর্যটককে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প হিসেবে ডুয়ার্সকে তুলে ধরছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।