বৃষ্টি বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। প্রবল দুর্যোগে ঘটেছে একের পর এক প্রাণহানিও। লাগাতার বৃষ্টিতে ফুঁলে ফেঁপে উঠেছে উত্তরবঙ্গের নদীগুলি। কোচবিহারের তোর্সা নদীতে লাল সর্তকতা জারি করেছে সেচ দফতর। লাল সতর্কতা জারি তিস্তাতেও। দোমহনী থেকে মেখলিগঞ্জ পর্যন্ত লাল সতর্কতা জারি। একইসঙ্গে জলঢাকা নদীতেও লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্র যেমন টাইগার হিল, রক গার্ডেন আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মুখ্য়সচিবকে নিয়ে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে , বৃষ্টি চলবে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত। টয়ট্রেন পরিষেবাও স্থগিত করা হয়েছে। এরই মধ্যে বাতিল করা হয়েছে উত্তরবঙ্গগামী একগুচ্ছ ট্রেন।
কোন কোন ট্রেন বাতিল
ভারী বৃষ্টির জেরে আলিপুরদুয়ার জেলার অনেক জায়গাতেই রেললাইনের উপর দিয়ে জল বইছে। এই পরিস্থিতিতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, রবিবার তিনটি ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে। এই ট্রেনগুলি হল নিউ জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার-নিউ জলপাইগুড়ি যাত্রী স্পেশ্যাল, ধুবরি-শিলিগুড়ি ডেমু এবং শিলিগু়ড়ি-বামনহাট এক্সপ্রেস। কিছু ট্রেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই থামিয়ে দিতে হয়েছে, যেমন বিন্নাগুড়ি বা গুলমা স্টেশনে যাত্রা শেষ হয়েছে কয়েকটি ট্রেনের।
বাতিল
নিউ জলপাইগুড়ি আলিপুরদুয়ার টুরিস্ট স্পেশাল
ধুবড়ি শিলিগুড়ি জংশন ডেমু
শিলিগুড়ি বানারহাট এক্সপ্রেস
যাত্রাপথ বদলানো হয়েছে
তিনটি ট্রেনের যাত্রাপথ বদলানো হয়েছে। এই ট্রেনগুলি হল শিয়ালদা-আলিপুরদুয়ার কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস, আলিপুরদুয়ার-দিল্লি সিকিম মহানন্দা এক্সপ্রেস, কামাখ্যা-ডক্টর অম্বেডকর নগর এক্সপ্রেস। তা ছা়ড়াও দু’টি ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হচ্ছে। রবিবারের জন্য আলিপুরদুয়ার-শিলিগুড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস বিন্নাগুড়়ি পর্যন্ত যাবে। শিলিগুড়ি-ধুবরি ডেমু যাবে গুলমা পর্যন্ত। তবে আপাতত হাওড়া কিংবা শিয়ালদা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) পর্যন্ত ট্রেন চলাচল মোটের উপর স্বাভাবিকই রয়েছে।
রুট বদল
১৩১৪৯ শিয়ালদহ নিউ আলিপুরদুয়ার কাঞ্চন কন্যা এক্সপ্রেস
১৫৪৮৩ সিকিম মহানন্দা এক্সপ্রেস
১৯৩০৬ কামাখ্যা ডাক্তার আম্বেদকর মেল
সংক্ষিপ্ত যাত্রাপথ
আলিপুরদুয়ার শিলিগুড়ি জংশন ইন্টারসিটি (বিন্নাগুড়ি পর্যন্ত যাবে)
শিলিগুড়ি ধূপগুড়ি ডেমু (গুলমা পর্যন্ত যাবে)
এদিকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের মানুষের পাশে থাকার জন্য দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার এক্স হ্যান্ডলে তিনি একটি পোস্ট করেন। সেখানেই তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন।
সেখানে অভিষেক লেখেন, ‘দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ির কিছু অংশে টানা বৃষ্টি এবং ধসে বিপর্যয়ের জেরে মৃত্যুর খবর গভীর বেদনাদায়ক। মিরিক, জোড়বাংলো, সুখিয়াপোখরি এবং ফালাকাটা এলাকা দুর্যোগের জেরে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দার্জিলিং জেলা প্রশাসন, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা নিরলস ভাবে ত্রাণ পৌঁছনো এবং উদ্ধারের চেষ্টা করছে।’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, 'ভারী বৃষ্টির কারণে দার্জিলিংয়ে মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করছি। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তার সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছি। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) একাধিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। প্রয়োজন অনুযায়ী আরও দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিজেপি কর্মীরাও দুর্গত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছেন। এই কঠিন সময়ে সকলের পাশে থাকার অঙ্গীকার করি।'