শুক্রবার দুপুরে রোজকার মতো ক্লাস চলছিল ফালাকাটার রাইচেঙ্গা বিদ্যানিকেতন হাইস্কুলে। সময় তখন দুপুর ১টা। হঠাৎ স্কুলের এক পড়ুয়া প্রধান শিক্ষককে গিয়ে জানায়, স্কুলের এক দাদা ব্যাগে করে পিস্তল নিয়ে এসেছে। যা শুনে আতঙ্কে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে প্রধান শিক্ষকের। অজানা আশঙ্কায় কেঁপে ওঠে বুক। তিনি ভয়ে ভয়ে পড়ুয়াকে ডেকে পাঠালেন। এদিকে প্রধান শিক্ষক ডেকেছে শুনে ব্যাগ ফেলেই স্কুলের দেওয়াল টপকে পালিয়ে যায়। এতে আরও ঘাবড়ে যান শিক্ষকরা।
খবর ছড়াতেই মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্কুল চত্ত্বরে। ব্যাগের সঙ্গে পিস্তলও ফেলে যায় পড়ুয়া। কেউই আর সাহস করে পিস্তলটি ছুঁয়ে দেখেননি। পাছে গুলি-টুলি বেরিয়ে যায়। এরপরই আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে পুলিশে খবর দেন প্রধান শিক্ষক। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফালাকাটা থানার পুলিশ।
পুলিশের এক আধিকারিক পিস্তলটি হাতে নিয়ে পরীক্ষা করেই বুঝতে পারেন, সেটি কোনও পিস্তল নয়। আসলে সিগারেট লাইটার। তবে পুলিশও স্বীকার করে, লাইটারটির নির্মাণ এতটাই নিখুঁত, যে সেটিকে পিস্তল ভেবে ভুল করাটা অস্বাভাবিক নয়। পুলিশ জানায় লাইটারটি দেখতে অনেকটা নাইন এম এম পিস্তলের মতোই। তবে অনভিজ্ঞরা অনায়াসে ভুল করতে পারেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ সরকারের সংবাদমাধ্যমকে জানান, পিস্তলের কথা শুনে ভয় পেয়ে যান। পুলিশকে ডাকতে দেরি করেননি। পরে এদিনের মতো স্কুল ছুটি দেওয়া হয়। ফালাকাটা থানার আইসি সমিত তালুকদার জানান, ওটা পিস্তলের মতো দেখতে একটি লাইটার। সেটি শিক্ষকদের সামনেই দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরে জানা গিয়েছে, অনলাইনে কেনা ওই লাইটারটি দেখতে ও আকারে যেন হুবহু নাইন এমএম পিস্তলের মতো। পিস্তলটি যে খেলনা, সে বিষয়ে সুনিশ্চিন্ত হতেই হাঁফ ছাড়েন প্রধান শিক্ষক সহ অন্যরাও। সেটি শিক্ষকদের সামনে জ্বালিয়েও দেখিয়ে দেন পুলিশ কর্মীরা। শিক্ষকদের ধারণা, ভয় দেখিয়ে মজা করার জন্য হয়তো পিস্তলের আকারের লাইটারটি নিয়ে এসেছিল ওই পড়ুয়া।