
Sandakphu Trekking Guideline: অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল সান্দাকফু ট্রেকিং। কোনও রুট দিয়েই আপাতত সান্দাকফু এবং ফালুটে চড়া যাবে না। নেপাল ও ভারত সরকারের সিদ্ধান্তে আপাতত পরবর্তী ঘোষণা পর্যন্ত তা বন্ধই থাকবে। উত্তরবঙ্গে আবহাওয়ার কমলা সতর্কতা জারি হওয়ায়, ঝুঁকি এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই ধরণের সতর্কতামূলক জরুরি সিদ্ধান্ত এই প্রথম বলে জানা গিয়েছে।
সান্দাকফু ট্রেকিং ভারতের অন্যতম রোমাঞ্চকর ও নয়নাভিরাম হিমালয় যাত্রা।দার্জিলিং জেলার সীমান্তে, নেপাল ও ভারতের মধ্যবর্তী রিজলাইনে অবস্থিত এই ট্রেক রুটটি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা। প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথে পদে পদে বদলে যায় পাহাড়ের রঙ, মেঘের খেলা, আর দূরে দিগন্তে একসঙ্গে দেখা মেলে বিশ্বের চার উচ্চতম শৃঙ্গ এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা, লোৎসে ও মাকালুর। শীতের সকালে সান্দাকফুর ‘স্লিপিং বুদ্ধ’ আকৃতি যখন সূর্যের প্রথম আলোয় সোনালি হয়ে ওঠে, তখন মনে হয় প্রকৃতি যেন এক মুহূর্তের জন্য থমকে দাঁড়িয়েছে। ফালুট, টংলু, গুরুমানিওর মতো ছোট ছোট গ্রাম, রডোডেনড্রনের বন আর স্থানীয়দের আতিথেয়তা মিলে এই ট্রেক হয়ে ওঠে এক অবিস্মরণীয় যাত্রা। আপাতত সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন ট্রেকাররা। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, "আবহাওয়া খারাপ হতে পারে এমন আশঙ্কার পূর্বাভাস আসতেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ট্রেকিং। এটা সময়োপযোগী ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত। আশা করছি, আশঙ্কা দূর হলেই ২-৩ দিনের মধ্যে এটা আবার খুলে দেওয়া হবে।"
কদিন আগেই এই এলাকার জন্য চালু করা হয় বিশেষ নিয়ম। সান্দাকফুকে ওয়েস্ট ফ্রি জোন হিসেবে ঘোষণা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যৌথভাবে ইন্দো-নেপাল সরকার এটা করবে। সম্প্রতি দার্জিলিংয়ের তুমলিংয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভারত ও নেপালের পর্যটন আধিকারিকেরা যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এই সম্পূর্ণ ট্রেক রুটকে ‘ওয়েস্ট ফ্রি রুট’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য, দায়িত্বশীল পর্যটনের আওতায় সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে বর্জ্যহীন এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন চালু করা।
এই রুটটি ভারত ও নেপালের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। তাই দুই দেশের সম্মতি ও উদ্যোগ প্রয়োজন। যা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জিটিএ পর্যটন দফতর এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইকো-ট্যুরিজম চেয়ারম্যান রাজ বসু। নেপালের তরফে প্রতিনিধিত্ব করেন দেশটির পর্যটন দফতর এবং রুরাল হোমস্টে ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যরা।
রাজ বসু জানান, “এই রুটে ট্রেকিং মূলত ভারতের দিকে হলেও, থাকার ব্যবস্থা বেশি নেপালের হোমস্টেগুলিতেই। তাই দায়িত্বশীল পর্যটনের জন্য দুই দেশের যৌথ সমন্বয় একান্ত জরুরি। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ট্রেক রুট ফের খুলে যাবে, তার আগেই সমস্ত পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি সেরে নিতে চাই আমরা।” নেপালে ইতিমধ্যেই প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার জন্য কাঠমান্ডুতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে সেগুলো দিয়ে হ্যান্ডক্রাফট তৈরি করে আয়ের পথও খোলা হয়েছে।