মিরিক থেকে কাঁকড়ভিটা যাওয়ার পথে নলদাঁড়ার কাছে বুধবার দুপুরে মারাত্মক পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে এবং আরও অনেকে গুরুতর আহত। স্থানীয় গ্রামবাসীর তৎপরতার কারণে গাড়ির মধ্যে থাকা এক শিশুকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে, তবে শিশুর মা এখনো নিখোঁজ।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী একটি চারচাকার গাড়ি পাহাড়ি ঢালু রাস্তা পার হতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থলটি দুর্গম হওয়ায় উদ্ধারকাজে কিছুটা বিলম্ব ঘটে। পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠায়। মৃতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। একজন নিহত ধন বাহাদুর কটওয়ার, নেপালের ধুলাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
ঘটনায় গুরুতর আহত আরও ১৭ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনকে নকশালবাড়ি ব্লক হাসপাতালে এবং বাকিদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর মিরিক মহকুমা হাসপাতাল থেকে ছাড়া দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন জানিয়েছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেই সড়কে যা সম্প্রতি দুধিয়া সেতুর ক্ষতির কারণে মিরিক থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যাতায়াতের প্রধান বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা জারি করেছে এবং ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে রাস্তা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছে।
উদ্ধার অভিযানে স্থানীয় গ্রামবাসী সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। তারা গাড়ির ভেতরে থাকা এক শিশুকে উদ্ধার করে নিরাপদে নিয়ে গেছেন। তবে শিশুর মা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, প্রত্যেক দিনের মতো এদিনও যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিল গাড়িটি। ওই চার চাকা গাড়িটি চালক-সহ মোট ১৯ জন যাত্রী নিয়ে নেপালের কাঁকরভিটা থেকে মিরিকের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর মিরিকের কাছে নলদাড়ায় পৌঁছতেই আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তা থেকে প্রায় ১৫০ ফিট নীচে খাদে পড়ে যায় যাত্রী বোঝাই ওই গাড়িটি। দুর্ঘটনাটি আবারও পাহাড়ি পথে যাতায়াতের ঝুঁকি এবং নিরাপত্তার অভাবকে সামনে এনেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, রাস্তার মান উন্নয়ন এবং চালকদের সচেতনতা বৃদ্ধি না হলে ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে না।