Advertisement

TRAI-এর পদক্ষেপে খুশি গ্রাহকরা, বাদ সাধছে টেলিকম কোম্পানিগুলো

TRAI সম্প্রতি এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য স্বস্তির খবর। তবে, এই পদক্ষেপে বেজায় অখুশি টেলিকম কোম্পানিগুলো।

TRAI-এর পদক্ষেপে খুশি গ্রাহকরা, বাদ সাধছে টেলিকম কোম্পানিগুলোTRAI-এর পদক্ষেপে খুশি গ্রাহকরা, বাদ সাধছে টেলিকম কোম্পানিগুলো
Aajtak Bangla
  • নয়াদিল্লি,
  • 19 Feb 2025,
  • अपडेटेड 10:37 PM IST

টেলিকম রেগুলেটরি  অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) সম্প্রতি এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য স্বস্তির খবর। তবে, এই পদক্ষেপে বেজায় অখুশি টেলিকম কোম্পানিগুলো। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, স্প্যাম কল ও মেসেজের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে, আর নিয়ম ভাঙলেই কোম্পানিগুলোর জন্য রয়েছে বড় অঙ্কের জরিমানা। কিন্তু, টেলিকম কোম্পানিগুলোর দাবি, শুধুমাত্র তাদের উপর চাপ না দিয়ে WhatsApp, Telegram-এর মতো অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আসুন, জেনে নেওয়া যাক TRAI-এর নতুন সংশোধনীগুলো কী এবং গ্রাহকদের কতটা সুবিধা হবে।

TRAI-এর নতুন সিদ্ধান্ত কী?
TRAI তাদের Telecom Commercial Communication Customer Preference Regulations (TCCCPR), 2018-এ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে, যার মধ্যে রয়েছে—

১. রিপোর্টিং-এর সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে
আগে যেখানে স্প্যাম কল ও মেসেজ রিপোর্ট করার জন্য গ্রাহকদের মাত্র ৩ দিন সময় দেওয়া হত, এখন সেটি ৭ দিনে বাড়ানো হয়েছে। ফলে, এখন আরও বেশি মানুষ অনাকাঙ্ক্ষিত কল ও মেসেজ রিপোর্ট করতে পারবেন।

আরও পড়ুন

২. অবৈধ টেলিমার্কেটারদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা
আগে টেলিকম কোম্পানিগুলোকে ৩০ দিনের মধ্যে অবৈধ টেলিমার্কেটারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হত। এখন তা কমিয়ে ৫ দিন করা হয়েছে। ফলে, দ্রুত স্প্যাম মেসেজ ও কল বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

৩. বড় অঙ্কের জরিমানা
TRAI স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, যদি কোনো টেলিকম কোম্পানি নিয়ম লঙ্ঘন করে, তাহলে তাদের উপর মোটা অঙ্কের জরিমানা বসবে—

প্রথমবার লঙ্ঘন করলে: ₹২ লক্ষ

দ্বিতীয়বার লঙ্ঘন করলে: ₹৫ লক্ষ

বারবার লঙ্ঘন করলে: ₹১০ লক্ষ পর্যন্ত জরিমানা

৪. স্প্যাম সনাক্ত করতে নতুন বিশ্লেষণ পদ্ধতি
টেলিকম কোম্পানিগুলোকে এখন কল ও মেসেজের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করতে হবে, যাতে সম্ভাব্য স্প্যাম কল ও মেসেজ দ্রুত চিহ্নিত করা যায়। বিশেষ করে, অল্প সময়ের মধ্যে অধিক পরিমাণে কল করা নম্বরগুলোর দিকে নজর রাখতে হবে।

৫. মেসেজ ক্যাটাগরির স্পষ্টীকরণ
এখন থেকে সমস্ত মেসেজ নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির অধীনে আসবে, যাতে গ্রাহকরা সহজেই বুঝতে পারেন কোনটি আসল এবং কোনটি স্প্যাম—

Advertisement

P (Promotional): বিজ্ঞাপনী মেসেজ

S (Service): সার্ভিস সম্পর্কিত তথ্য

T (Transactional): ব্যাংক বা অন্য কোনো আর্থিক লেনদেনের বার্তা

G (Government): সরকারি সংস্থার বার্তা

গ্রাহকদের জন্য সুবিধা কী?

* স্প্যাম কল ও মেসেজ রিপোর্ট করার সময় বেড়েছে, ফলে বেশি মানুষ অভিযোগ জানাতে পারবেন।

* টেলিকম কোম্পানিগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, ফলে স্প্যাম কমবে।

* জরিমানা বসানোর কারণে কোম্পানিগুলো আরও সতর্ক হবে, যার ফলে গ্রাহকরা স্প্যাম মুক্ত অভিজ্ঞতা পাবেন।

* মেসেজ ক্যাটাগরি থাকায় স্প্যাম ফিল্টার সহজ হবে, ফলে ফাঁদে পড়ার সম্ভাবনা কমবে।


কেন আপত্তি করছে টেলিকম কোম্পানিগুলো?
টেলিকম কোম্পানিগুলোর সংগঠন COAI (Cellular Operators Association of India) TRAI-এর এই নতুন নিয়মের তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের বক্তব্য—

* এই নিয়ম শুধুমাত্র টেলিকম কোম্পানিগুলোর উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। WhatsApp, Telegram-এর মাধ্যমেও স্প্যাম মেসেজ ও কল আসে, কিন্তু TRAI তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

* জরিমানার বোঝা শুধুমাত্র টেলিকম কোম্পানিগুলোর উপর চাপানো হচ্ছে, অথচ মূল সমস্যা তৈরি করছে টেলিমার্কেটাররা।

* টেলিকম কোম্পানিগুলোর উপর বাড়তি চাপ পড়বে, কারণ তারা বিশাল সংখ্যক গ্রাহকের নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে।

TRAI-এর এই নতুন নিয়ম গ্রাহকদের জন্য নিঃসন্দেহে ভালো খবর। স্প্যাম কল ও মেসেজ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কঠোর নিয়ম আনা হয়েছে, যা সরাসরি মোবাইল ব্যবহারকারীদের স্বস্তি দেবে। তবে, টেলিকম কোম্পানিগুলোর যুক্তিও একেবারে ফেলনা নয়— OTT পরিষেবাগুলোর (WhatsApp, Telegram) মাধ্যমেও স্প্যাম ছড়াচ্ছে, তাই সেগুলোর জন্যও আলাদা বিধিনিষেধ প্রয়োজন।

এখন দেখার বিষয়, TRAI তাদের অবস্থানে কতটা অনড় থাকে, আর টেলিকম কোম্পানিগুলোর দাবি আদৌ মানা হয় কিনা। তবে, আপাতত মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য এটি বড় সুখবর, কারণ এবার স্প্যাম কল ও মেসেজের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

Read more!
Advertisement
Advertisement