Indo-Bangladesh Border Situation: নিজের দেশে নৈরাজ্য পরিস্থিতি। শান্তির খোঁজে নজরে পড়শি দেশ। যার নির্যাস, ভারতে ঢোকার জন্য অনুরোধ করছে কয়েক হাজার বাংলাদেশি নাগরিক। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ পালিয়ে ভারতে আসতে চাইছেন। উত্তরবঙ্গে সীমান্তে এখন বাংলাদেশি নাগরিকরা জড়ো হয়েছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সীমান্তগুলি কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মালদা, সমস্ত জেলায় BSF-এর পাশাপাশি সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে কিছু সীমান্তে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও।
কোচবিহার এলাকায় বিএসএফের ১৫৭ ব্যাটালিয়নের সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতের কাঁটাতারের চার শতাধিক মিটার দূরে গাইবান্দা জেলার গেন্দুগুড়ি ও দইখাওয়া গ্রামে কয়েক হাজার বাংলাদেশি নাগরিক জড়ো হয়েছেন। শুক্রবার সকাল থেকে তাদের সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। অন্যদিকে কোচবিহারে সীমান্ত এলাকা শীতলখুচির পাঠানটুলি গ্রামে পর্যাপ্ত বিএসএফ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং টহল চলছে। বিএসএফ কড়া নজর রাখছে।
এদিকে গৌড়বঙ্গের মালদা-দিনাজপুর ও প্রায় ৭০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত (India-Bangladesh Border)। সেই সব এলাকাতেও সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় আশঙ্কা রয়েছে ভারতে অনুপ্রবেশেরও। সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে বিএসএফ জওয়ানের সংখ্যা। এতেও সন্তুষ্ট নয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাই মালদা (Malda) ও দুই দিনাজপুর জেলার সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে ভারতীয় সেনাও। তিন জেলায় নিযুক্ত বিএসএফের ব্যাটালিয়নকে হেলিপ্যাড তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। এ নিয়ে রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগকেও সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি, মালদার মহদিপুর ও উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুর সীমান্তে দল গঠন করে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেনার দলগুলি সীমান্তে অস্থায়ী ছাউনিতে থাকছে। তেমন কোনও ঘটনা ঘটলে যাতে দ্রুত মোকাবিলা করা যায় তার জন্যই আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মঙ্গলবার দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠক করে রাজ্যসভা ও লোকসভায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দেন বিদেশমন্ত্রী। তারপরেই বিদেশ মন্ত্রক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে স্থল সেনা, বায়ু সেনা এবং বিএসএফকে একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে গৌড়বঙ্গের তিন জেলায় শতাধিক সেনা পৌঁছে গিয়েছে। বাড়তি নজরদারি শুরু করেছে বিএসএফ। তিন জেলায় বিএসএফের হেলিপ্যাড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে বিশেষ নজর রেখেছে বিএসএফ। পড়শি দেশে ছাত্র আন্দোলনের মাঝামাঝি সময় থেকেই সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছিল৷ গণ অভ্যুত্থানের পর সেই নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে অনুপ্রবেশ রুখতে সতর্ক দৃষ্টি রেখে চলেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী। কাঁটাতারহীন সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
বুধবারই জলপাইগুড়ি জেলায় ফুলবাড়ি সীমান্তে জড়ো হয়েছেন বহু বাংলাদেশি ভারতে ঢোকার জন্য। বুধবার দুপুরে দক্ষিণ বেরুবাড়ির (Berubari) ধরধরা পাড়া উন্মুক্ত সীমান্ত এলাকায় (Border area) জড়ো হন প্রায় হাজারখানেক বাংলাদেশি নাগরিক। সকলেরই কাতর আবেদন ছিল, তাঁদের ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে দেওয়া হোক। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছান বিএসএফের (BSF) পদস্থ কর্তারা। পৌঁছায় সেনাবাহিনীও। তবে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে অতিরিক্ত জওয়ান মোতায়েন করা হয় উন্মুক্ত সীমান্তে। বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। লুঠপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে তাঁদের অভিযোগ। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী।