রাতের অন্ধকারে স্কুল চত্বরে চাঞ্চল্যকর ঘটনা! সিসিটিভি বন্ধ করে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে স্কুলে ঢুকে পড়ছে যুবক-যুবতীরা। এরপর স্কুলের পিছনের ফাঁকা জায়গা যেন রূপ নিচ্ছে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের আস্তানায়। এমনই অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের বাদামাইল লক্ষী প্রতাপ উচ্চ বিদ্যালয় ঘিরে।
গতকাল, মঙ্গলবার রাতেই স্কুলে ঢুকতে দেখা যায় এক যুগলকে। স্থানীয় বাসিন্দারা টের পেয়ে ছুটে গেলে, তারা স্কুলের পেছনের গেট দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপরই উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, “বেশ কিছুদিন ধরেই রাতে স্কুলে অশালীন কাজ হচ্ছে। এতদিন সিসিটিভি বন্ধ থাকায় কিছু প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছিল না। এবার হাতে-নাতে ধরা পড়ল।”
স্কুল সূত্রে খবর, এই ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে বৃদ্ধ নৈশপ্রহরী কানু দেবনাথকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিয়মিত স্কুলে বাইরের লোকজনকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন, এমনকি অসামাজিক কাজের ক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ঘটনার পরপরই নৈশপ্রহরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসিত বরণ লাহিড়ী বলেন, “রাতেই বিষয়টি আমার কানে আসে। আজ সকালে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দেখা গিয়েছে, রাত ৯টা ২১ মিনিট থেকে ৯টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত সিসিটিভি বন্ধ ছিল। এই সময়েই ওই যুগল স্কুলে ঢুকেছিল বলে অনুমান। কী কারণে সিসিটিভি বন্ধ ছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
যদিও নৈশপ্রহরী কানু দেবনাথ স্বীকার করেছেন যে, সিসিটিভি তিনিই বন্ধ করেছিলেন। তা নিয়ে উঠেছে আরও প্রশ্ন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ। প্রশ্ন উঠছে, দিনের পর দিন কীভাবে এই কাজ চলছিল? কেন এতদিন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি?
এদিকে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এলেও এখনও পর্যন্ত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সঙ্গে আজ সকালে বৈঠক হয়েছে। প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, “নৈশপ্রহরীর দায়িত্বে গাফিলতি প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্কুল চত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে, ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।