মালদা ও মুর্শিদাবাদে হিংসা নিয়ে রাজ্য সরকার ও তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আলিপুরদুয়ারের জনসভা থেকে দুই জেলায় হিংসা নিয়ে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন তিনি। ওযাকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় হিংসা ছড়িয়েছিল। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিংসা ছড়িয়েছিল মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলায়। হিংসায় কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য বাড়ি, দোকান, গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুল লাগিয়ে দেওয়া হয়। বহু মানুষকে বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়।
আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে এনিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন মোদী। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, 'মুর্শিদাবাদে যা ঘটেছে...মালদায় যা ঘটেছে...এটা এখানকার টিএমসি সরকারের নির্মমতার একটি উদাহরণ। মা বোনাদের জীবন পুড়িয়ে ছাই করে দেওযা হয়েছে। কয়েকজনকেকুপিয়ে খুন করা হয়েছে। যখন সরকারে থাকা একটি পার্টির বিধায়ক, নেতা লোকের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়, আর পুলিশ তামাশা দেখে, ওই ভয়াবহ স্মৃতির কল্পনা করুন। আমি বাংলার ভদ্রলোকদের বলতে চাই সরকার কি এভাবে চলে? এভাবে সরকার চলে কি? বাংলার জনগণের ওপরে অত্যাচার নিয়ে সরকারের কোনও প্রভাব পড়েনি। এখানে কোর্টকে আসতে হয়। বাংলার মানুষ আর টিএমসি সরকারের ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখে না। এখানকার মানুষের এখন কেবল আদালতের উপর নির্ভর করতে হবে। এজন্যই সমগ্র বাংলা বলছে - বাংলায় হাহাকার, আমরা নির্মম সরকার চাই না!'
ভাষণে দুর্নীতি নিয়েও সরব হন মোদী। তাঁর কথায়, দুর্নীতির সবচেয়ে বড় প্রভাব যুব সমাজ, গরিব মানুষদের ওপরে পড়ে। তিনি বলেন, 'আজ পশ্চিমবঙ্গ একই সঙ্গে অনেক সঙ্কটে ঘেরা। একটি সঙ্কট হল সমাজে ছড়িয়ে পড়া হিংসা এবং অরাজকতা। দ্বিতীয় সঙ্কট হল মা ও বোনদের নিরাপত্তাহীনতা, তাঁদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপরাধ। তৃতীয় সঙ্কট হল যুবসমাজের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া চরম হতাশা, ব্যাপক বেকারত্ব। চতুর্থ সঙ্কট হল ব্যাপক দুর্নীতি, এখানকার ব্যবস্থার উপর জনগণের আস্থা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। পঞ্চম সঙ্কট হল শাসক দলের স্বার্থপর রাজনীতি যা দরিদ্রদের অধিকার কেড়ে নেয়।'
শিক্ষক নিয়োগ-সহ শিক্ষা ব্যবস্থায় একাধিক দুর্নীতি নিয়ে মোদী সুর চড়িয়ে বলেন, 'দুর্নীতির সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছে যুবসমাজ, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি। আমরা দেখেছি দুর্নীতি কীভাবে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে। তৃণমূল সরকার হাজার হাজার শিক্ষক এবং তাঁদের পরিবারের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিয়েছে। এটি কেবল কয়েক হাজার শিক্ষকের ধ্বংস নয়, বরং সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি ঘটছে। এখনও, তারা তাদের ভুল স্বীকার করতে অস্বীকার করে, বরং আদালতকে দোষারোপ করে। তৃণমূল কংগ্রেসের জালিয়াতরা শত শত দরিদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েদের অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।'