বাঁকুড়া সদর থানার কালপাথর বিনাপানি হাই স্কুল থেকে উদ্ধার অঙ্কের শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ। মৃতের নাম উজ্জ্বলকুমার দাস। মঙ্গলবার দোতলার একটি ঘর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
আর পাঁচদিনের মতো মঙ্গলবারও স্কুলে এসেছিলেন উজ্জ্বলকুমার দাস। ছাত্র-ছাত্রী কমই ছিল অন্যদিনের তুলনায়। তবে তিনি ক্লাস করিয়েছিলেন। স্কুলের অন্য শিক্ষকরা জানিয়েছেন, কাজ শেষে সব শিক্ষক স্টাফরুম থেকে বেরিয়ে যান। সেই সময় সেখানে ওই অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন না। তবে তাঁর মোটরবাইক দেখা যায়। ফলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এরপর স্কুলের দোতলা থেকে ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়।
এদিকে ঘটনা ঘিরে স্কুলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তাদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া যদিও মেলেনি। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, আত্মহত্যা করেছেন ওই অঙ্কের শিক্ষক। তবে তিনি কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তা খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা।
এদিকে এই ঘটনার স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মৃতের স্ত্রী। অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে দিনের পর দিন স্কুলে অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। সেজন্য তিনি মারা গিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'স্কুলে প্রায় অশান্তি হত। আমাকে বাড়িতে বলত। কখনও মিডডে মিল কখনও খাতা দেখা নিয়ে। স্কুলের শিক্ষকরাই বলতে পারবে কেন আমার স্বামী মারে গেল।'
স্কুলের এক শিক্ষক জানান, উজ্জ্বলবাবু স্কুলে এসে স্বাভাবিক আচরণ করেছিলেন। তিনি যে এমন সিদ্ধান্ত নেবেন, তা বোঝা যায়নি। পারিবারিক কোনও অশান্তি ছিল কি না জানা নেই। ক্লাস করে ছুটি হওয়ার সময় হয়তো উপরে গিয়েছিলেন। স্কুলের কোনও সহকর্মীর সঙ্গে ঝামেলা ছিল না। অত্যন্ত ভদ্র ও শান্ত মানুষ ছিলেন।
আর এক শিক্ষকের কথায়, 'বেশ কয়েক মাস আগে উজ্জ্বলবাবু টিচার ইন চার্জ ছিলেন। কয়েক মাস সেই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তবে তারপর আর নিজেই থাকতে চাননি। তা নিয়ে স্কুলে কোনও অশান্তি হয়েছিল, এমনটাও নয়। তাঁর মৃত্যুর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ দায়ি নয়। পুলিশ তদন্ত করলে সঠিক খবর সামনে আসবে।'