
স্বরূপনগরের হাকিমপুর চেকপোস্ট দিয়ে বহু বাংলাদেশি, যারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন,SIR পর্ব শুরু হতেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন। এই ছবি গত কয়েকদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে। হাকিমপুর সীমান্তে জড়ো হওয়া এই বাংলাদেশি নাগরিকদের সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন বিএসএফ জওয়ানরা। দিন দিন বাড়ছে ভিড়। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, গত কয়েকদিনে স্বরূপনগরের হাকিমপুর সীমান্ত দিয়ে আনুমানিক ২ হাজার বাংলাদেশি দেশে ফিরে গিয়েছেন। আর এই আবহেই বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস দুই দিনের জন্য সীমান্তবর্তী এলাকা পরিদর্শন করছেন।
রাজ্যপাল সোমবার কলকাতা থেকে উত্তর ২৪ পরগনার হাকিমপুর সীমান্তের দিকে সড়ক পথে যাত্রা শুরু করেন। হাকিমপুরই সেই জায়গা যেখানে গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা জড়ো হচ্ছেন। হাকিমপুর পরিদর্শনের পর রাজ্যপাল এদিন রাতে নদীয়ার কৃষ্ণনগরে থাকবেন এবং মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ সীমান্তও পরিদর্শন করবেন।
প্রসঙ্গত, বাংলায় ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকেই সীমান্তের বিভিন্ন চেকপোস্ট দিয়ে হাজার হাজার অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী দেশ ছাড়তে শুরু করেছেন। সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (BSF) জানিয়েছে, আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় নথি খতিয়ে দেখার পর বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (BGB) হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। জানা গিয়েছে, স্বরূপনগরের হাকিমপুর চেকপোস্ট দিয়ে বহু বাংলাদেশি, যারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, SIR পর্ব শুরু হতেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকেই দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকজন বেশ কয়েকবার রাজ্যের বিভিন্ন নির্বাচনে ভোটও দিয়েছেন। বিভিন্ন সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্পেও নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।
হাকিমপুর বিএসএফ ক্যাম্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসআইআর শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১,৭০০ বাংলাদেশি নাগরিক ভারত ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে গেছেন। কর্তৃপক্ষের অনুমান, ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনী এবং বাড়তি নজরদারির ফলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা ধরা পড়ার আশঙ্কায় সীমান্ত পেরিয়ে পালানোর পথ বেছে নিচ্ছেন।
জানা গিয়েছে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ তথা বিজিবির সঙ্গে আলোচনা করেই হাকিমপুর সীমান্তে জড়ো হওয়া ব্যক্তিদের বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে বিএসএফ। সীমান্ত পারের সময় তাঁদের তথ্য নথিভুক্ত করা হচ্ছে। জড়ো হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে কেউ থাকেন কলকাতার সেক্টর ফাইভে, কেউ দিল্লিতে আবার কেউ উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন রেললাইনের ধারের ঝুপড়িতে।