পানাগড় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়া সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে এলেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়-সহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সুতন্দ্রার বাড়িতে না আসা নিয়ে স্থানীয় সাংসদ রচনা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা। তিনি বলেন, 'আমি জানি আপনি (পড়ুন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়) মহাকুম্ভে ডুব দিয়েছেন। মোদী এবং যোগী সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন । কিন্তু রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়া এবং বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন মহাশয় আপনারা হুগলির চন্দননগরের মেয়ে সুতন্দ্রা পরিবারের পাশে দাঁড়াবার জন্য একবার তো আসতে পারতেন। কোথায় আপনারা? আসলে মহিলাদের বিরুদ্ধে কোনও অত্যাচার হলে আপনারা ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত।'
এদিকে, সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। তিনি বলেন,'কন্যাশ্রী , যুবশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আমরা কিছু চাইছি না। আগে আমাদের লক্ষ্মীরা তো ঘরে বাঁচুক। তারপরে তো লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নেবে। আমরা মহিলা সুরক্ষা চাই। ঘরের লক্ষ্মীরা যদি মরে যায়, তো লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কে নেবে? কন্যাশ্রী তে শ্রী না থাকে তাহলে কন্যাশ্রী কে নেবে। আগে তাদের শ্রী দিন, সেফগার্ড দিন, সুরক্ষা দিন। অন্য রাজ্যে গিয়ে বাংলার মেয়েরা সুরক্ষিত। কিন্তু নিজের ঘরে তারা সুরক্ষিত নয়। কেন নয়? আগে সবকিছু বন্ধ করে মেয়েদের সুরক্ষা দেওয়া হোক।'
এদিকে, এই মামলায় অবশেষে বড় সাফল্য পেল পুলিশ। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত বাবলু যাদবকে। জানা গেছে, রবিবার গভীর রাতে পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং পুরনো জিটি রোডের সংযোগস্থলের কাছে ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি গাড়ি উল্টে মৃত্যুর ঘটনা হিসেবে ধরা হলেও তদন্তে উঠে আসে নতুন তথ্য।
সুতন্দ্রার সঙ্গীদের দাবি, ঘটনাস্থলে একটি সাদা গাড়ি ধাওয়া করছিল তাঁদের গাড়িকে। সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সেই গাড়ির প্রধান লক্ষ্য। অভিযোগ, সাদা গাড়ির আরোহীরা তাঁদের উদ্দেশ্য করে অশালীন ইঙ্গিত করছিল এবং নানাভাবে উত্যক্ত করছিল। সেই সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সুতন্দ্রার গাড়ি উল্টে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তদন্তে নেমে কাঁকসা থানার পুলিশ বাবলু যাদব নামে এক ব্যক্তিকে বর্ধমান থেকে আটক করে। জানা গেছে, বাবলুই সেই সাদা গাড়িটি চালাচ্ছিল এবং তিনি গাড়ির মালিকও। ওই গাড়িতে আরও চারজন ছিল, যাঁরা বাবলুর কর্মচারী বলে জানা গেছে। বাবলুকে জেরা করে পুলিশের হাতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসেছে। ঘটনার আসল কারণ জানতে তাকে আরও গভীরভাবে জেরা করছে পুলিশ।
সংবাদদাতাঃ ভোলানাথ সাহা