মহাজাগতিক বিষয় নিয়ে আমরা মোবাইল ফোনে অথবা টিভির পর্দায় অনেক কিছু দেখি। আবার ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন শিক্ষামূলক বইয়ের মাধ্যমে এই বিষয়ে জানতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা সেগুলি চোখে দেখার সুযোগ পাইনা। আর স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সেই অনুভূতি দেওয়ার জন্য এক বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করলে স্কুল শিক্ষক বিক্রমজিৎ মন্ডল। যিনি বিশ্বভারতীর পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন। তিনি ক্যাম্পের মাধ্যমে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দ্বারা ছাত্র ছাত্রীদের বিভিন্ন গ্রহ উপগ্রহগুলি স্বচক্ষে দেখার বন্দোবস্ত করেছেন। এখান থেকেই মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং তার উপগ্রহ ও শুক্র এবং বিভিন্ন স্টার ক্লাস্টার দেখা যায়। তবে কুয়াশা থাকার কারণে শনি ও ইউরেনাস এই সমস্ত গ্রহ গুলি দেখা যায়নি।
জানা গিয়েছে চলতি মাসে এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বঙ্গবাসী। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতের আকাশে সাতটি গ্রহকে একসঙ্গে দেখা যাবে, যা বিরল ঘটনা। প্রসঙ্গত প্রত্যেকদিন রাতের আকাশে শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন—এই ছয়টি গ্রহ দৃশ্যমান হয়। তবে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে মাত্র এক রাতের জন্য আকাশে এই ছয়টি গ্রহের সঙ্গে বুধ গ্রহটিকেও দেখা যাবে। পৃথিবীসহ আমাদের সৌরজগতের আটটি মূল গ্রহ একই কক্ষপথে থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে থাকে। তবে তাদের প্রদক্ষিণ করার গতি ভিন্ন ভিন্ন হয়।
সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ বুধ ৮৮ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে থাকে। অর্থাৎ গ্রহটিতে ৮৮ দিনে ১ বছর হয়। আবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর সময় লাগে ৩৬৫ দিন। আর নেপচুনের সময় লাগে ৬০ হাজার ১৯০ দিন। অর্থাৎ নেপচুন গ্রহের এক বছরের মানে হলও পৃথিবীর প্রায় ১৬৫ বছর। গ্রহগুলোর গতি ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় কখনো কখনো কিছু গ্রহ সূর্যের একই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে প্রদক্ষিণ করতে থাকে।বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি—এই পাঁচ গ্রহ পৃথিবী থেকে খালি চোখে দৃশ্যমান হওয়ার মতো যথেষ্ট উজ্জ্বল।তবে ইউরেনাস ও নেপচুন দেখতে হলে বাইনোকুলার বা টেলিস্কোপের প্রয়োজন হয়।
তবে বিক্রমজিৎ মন্ডলের সব মিলিয়ে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে অভিনব ক্যাম্পের আয়োজনকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন অভিভাবকেরা। ভূগোলের সহশিক্ষিকা এবং অভিভাবক বিজয়া দত্ত জানান তিনি তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন এবং শুক্র মঙ্গল বৃহস্পতি এই তিনটি গ্রহকে স্বচক্ষে টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখলেন। এ যেন এক আলাদাই অনুভূতি। মূলত বাচ্চাদের বিজ্ঞান সম্বন্ধে আরও বেশি করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য এই ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে।