বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পক্ষে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ঘুষ নিচ্ছিলেন রাজ্যের একজন সরকারি ডাক্তার। আগে থেকেই এই গোপন ডিলের ব্যাপারে খোঁজ পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI। তাই ১০ লক্ষ টাকা হাতেনাতে নেওয়ার সময়ই এই ডাক্তারকে গ্রেফতার করে সিবিআই অফিসাররা। ধৃত ডাক্তারের নাম তপন কুমার জানা। তিনি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের অ্যাসেসর অর্থাৎ মূল্যায়ণকারী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এছাড়াও তিনি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান হিসাবে কর্মরত।
সিবিআই প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই ডাক্তার কর্নাটকের একটি প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজের পক্ষে ইন্সপেকশন রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। আগে থেকেই খবর পেয়ে সিবিআই অফিসাররা ফাঁদ পাতেন। কর্নাটকের বেলগাভির ওই মেডিক্যাল কলেজের দুই প্রতিনিধি আসেন টাকা দিতে। ডাক্তার টাকা নেওয়ার সময় তাঁকে হাতেনাতে ধরা হয়। এরপর ওই ডাক্তার ও তাঁকে টাকা দিতে আসা কর্নাটকের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দুই প্রতিনিধির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। এরপর ওই ডাক্তার ও দুই ধৃতের বর্ধমান, কলকাতা ও বেলগাভির তিনটি এলাকায় চলে তল্লাশি। জানা গিয়েছে, মোট তিন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকার নগদ টাকা উদ্ধার করেছে সিবিআই। এছাড়া ওই ডাক্তারের বর্ধমানের বাড়ি থেকে নগদ ছাড়াও প্রচুর সোনা ও হিরের গয়না উদ্ধার হয়েছে।
জানা যাচ্ছে ধৃত ডাক্তার তপন কুমার জানা নাকি কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গেও জড়িত। যদিও সিবিআই তাদের বিবৃতিতে এই বিষয়টি উল্লেখ করেনি। জানা গিয়েছে শনিবার রাত ১১টা নাগাদ সিবিআই এর ৮ জনের প্রতিনিধি দল বর্ধমান শহরের মিঠাপুকুর হাতিশাল এলাকায় এই অভিযান চালায়। রবিবার সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলে এই অভিযান। ওই ডাক্তারের স্ত্রী ছিলেন বাড়িতে। রাতভর অভিযান শেষে রবিবার সকালে চিকিৎসকের বাড়ি থেকে নগদ প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা, হিরে, সোনার গয়না, মূল্যবান রত্ন উদ্ধার করে সিবিআই। পাশাপাশি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ও কিছু কাগজপত্র নিয়ে যায় সিবিআই এর দল। শনিবার রাতে বর্ধমান থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই অভিযান চালায় সিবিআই।
রিপোর্টারঃ রাজেশ সাহা, সুজাতা মেহেরা