রাজস্থানের যে পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে তাজমহল সেই পাথর দিয়ে তৈরি হচ্ছে পুরুলিয়ায় দুর্গা মন্দির। হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন আসছে বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দূর্গা পূজা। আর এ বছর পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে পুজো হতে চলেছে এক অঞ্জলি মাত্রায়।
আগ্রার তাজমহল ও কোলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এই দুই স্থাপত্য শিল্পে ব্যবহৃত হয়েছে রাজস্থানের মাকরানা মার্বেল। সেই মার্বেল দিয়েই এবার পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে তৈরি হচ্ছে দুর্গা মন্দির। মন্দির তৈরির কারিগর এসেছে রাজস্থান থেকে। রঘুনাথপুর তাঁতিপাড়া ষোলোআনা উদ্যোগ নিয়েছে এই মন্দির নির্মাণের। উদ্যোক্তাদের দাবি, জেলায় এই প্রথম কোনও দুর্গা মন্দির নির্মাণ করা হচ্ছে রাজস্থানের মাকরানা মার্বেল দিয়ে।জানা গেছে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হবে এই মন্দির নির্মাণে।
রঘুনাথপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁতিপাড়ায় আনুমানিক ৩০০ বছর ধরে দুর্গাপুজা হয়ে আসছে। বর্তমানে তাঁতীপাড়া ষোলোআনা এই প্রাচীন পুজো পরিচালনা করে চলেছেন। মন্দিরের ভবন পুরাতন হওয়ায় একাধিকবার সংস্কার করা হয়। কিন্তু তারপরও ছাদ থেকে খসে পড়ছিল সিমেন্টের চাঙড়। কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই মন্দির ভেঙ্গে নতুন করে মন্দির তৈরি করা হবে।
পুরুলিয়া জেলার মধ্যে এই প্রথম রাজস্থানের এই ঐতিহ্যপূর্ণ পাথর দিয়ে কোনও দুর্গা মন্দির নির্মিত হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, এই মাকরানা পাথর শক্ত, স্বচ্ছ সাদা রঙের হয়। যুগ যুগ ধরে নিজের সৌন্দর্য ও স্থায়িত্বের জন্য বিখ্যাত এই পাথর। রাজস্থানের মরুপ্রান্তর পেরিয়ে এই পাথর যখন রঘুনাথপুরে পৌঁছয়, তখন থেকেই এই পাথর দেখতে ভিড় করেছে উৎসুক জনতা।
তাঁতিপাড়া ষোলআনা কমিটির উদ্যোগে নির্মিত হওয়া এই দুর্গামন্দির একদিকে যেমন পুরুলিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় আবেগকে আরও দৃঢ় করবে তেমনই পর্যটকদের আকৃষ্ট করতেও বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়। অন্যদিকে রাজস্থানের ঐতিহ্যপূর্ণ পাথর এনে রঘুনাথপুর শহরে এমন একটি দুর্গা মন্দির তৈরি করার জন্য তাঁতিপাড়া ষোলআনা কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রঘুনাথপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান তরণী বাউরি।