Durgapur Gangrape Case: দুর্গাপুরের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাত সাড়ে ১২টায় কলেজ ছাত্রীর ক্যাম্পাসের বাইরে যাওয়া উচিত ছিল না বলে মন্তব্য করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি রবিবার উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেখানেই তিনি একথা বলেন। তাঁর বক্তব্যকে ভালভাবে নেননি নির্যাতিতার বাবা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে পাল্টা দাবি রেখেছেন মুখ্য়মন্ত্রীর কাছে।
মুখ্য়মন্ত্রীর বক্তব্য়ের প্রেক্ষিতে দুর্গাপুর গণধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা বলেছেন, "তিনি খুব ভালো কথা বলেছেন। আমরা তাকে আজ রাতে একটি ফতোয়া জারি করতে বলব যে আগামীকাল সকাল থেকে কোনও মেয়েকে তার বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। এটা ভালো হবে। কোনও মেয়ে বাইরে যাবে না। কোনও ঘটনা ঘটবে না।"
এখানেই থামেননি তিনি। তিনি এও বলেন, "যদি তিনি তাঁর কাজটি করতে না পারেন, তাহলে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত। পশ্চিমবঙ্গে, ওড়িশার এক মেয়ের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা কী বার্তা দিচ্ছে? তিনি যদি ফতোয়া জারি করেন, সেটাই সবচেয়ে ভালো হবে। আগামীকাল থেকে মেয়েরা যদি তাঁদের বাড়ি থেকে বের না হয় তবে সেটাই ভালো হবে।" তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা ঠিকভাবে দেখছেন না। সেই কারণেই তিনি ভুক্তভোগীর উপর দোষ চাপাচ্ছেন। আমরা এই আচরণকে খুবই আপত্তিকর বলে মনে করি।"
কী বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, 'ঘটনাটিকে কেউ সমর্থন করে না। অত্যন্ত মর্মান্তিক। তবে ওটি একটি প্রাইভেট কলেজ। মেয়েটির নিরাপত্তার দায়িত্ব তো সেই প্রাইভেট কলেজেরই। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কীভাবে মেয়েটি ক্যাম্পাসের বাইরে গেল। জঙ্গল এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে বলে শুনেছি। কী হয়েছে জানি না। পুলিশ খতিয়ে দেখছে। বেসরকারি কলেজগুলির উচিত নিরাপত্তা আরও জোরদার করা। বিশেষ করে ছাত্রীদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা উচিত। রাতে তাদের বাইরে বেরোতে দেওয়া উচিত নয়। নির্যাতিতা বয়ান দিয়েছেন শুনেছি। তাঁর বয়ানের ভিত্তিতেই ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।'
এরপরই তিনি অন্যান্য রাজ্যের উদাহরণ টেনে বলেন, 'বাংলায় এই ধরনের ঘটনায় আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে চলি। ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে চার্জশিট বেরিয়ে যায়। নিম্ন আদালতে ফাঁসির সাজাও ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ওডিশার সমুদ্র পাড়ে ৩ জনের ধর্ষণ হয়েছিল কিছুদিন আগেই। কী পদক্ষেপ করেছে সে রাজ্যের সরকার?' মুখ্যমন্ত্রীর আরও সংযোজন, 'অন্য রাজ্যে ধর্ষিতাকে কোর্টে যাওয়ার আগে রাস্তায় জ্বালিয়ে মেরে দেওয়া হয়। সাংবাদিকদের ধরে উলঙ্গ করে জেলে ভরে দেওয়া হয়। বাংলায় এসব সহ্য করা হয় না।
তাঁর বক্তব্য, পুলিশ কীভাবে জানবে রাতে কখন কে বেরোবে! বিভিন্ন রাজ্যের ছেলেমেয়েদের অনুরোধ করব রাতে যেন তাঁরা না বেরোয়। বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজেরও একটা দায়িত্ব আছে। কেউ যদি রাত সাড়ে ১২টায় কোথাও যায়, পুলিশ তো আর তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বসে থাকবে না। যে যেখানে খুশি যেতে পারে, এটা তাদের অধিকার। কিন্তু হস্টেলের একটা সিস্টেম আছে। ও ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট এবং ওটা প্রাইভেট কলেজ।'
কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না এই ঘটনায়, উচিত শাস্তি পাবে দোষী। এমনটাই শেষে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।