মনে করা হচ্ছে দেনার দায়েই আড়াই বছরের পুত্রসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন হালতুর দম্পতি। ট্যাংরা কাণ্ডেও উঠে আসছে ঋণের তথ্য। এবার প্রায় একই ঘটনা ঘটল বীরভূমে। বেসরকারি সংস্থার লোন পরিশোধ করতে না পারার অপমানে আত্মহত্যা করলেন স্বামী-স্ত্রী। ঘটনাটি লাভপুরের বাবনা গ্রামের। কীটনাশক ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন ওই দম্পতি। জানা যাচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাঙ্কের ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় অপমানের দায়ে আত্মঘাতী হন ওই স্বামী স্ত্রী। মৃত ব্যক্তির নাম লক্ষণ মুখোপাধ্যায়(বয়স ৫২) ও তার স্ত্রী বনশ্রী মুখোপাধ্যায়।
মুখোপাধ্যায় দম্পতির বাড়ি বীরভূমের লাভপুর ব্লকের চৌহাট্টা মহোদরী ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের বাবনা গ্রামে। লক্ষণ মুখোপাধ্যায় পেশায় দিনমজুর। জানা যায়, অভাবের সংসারের হাল ধরতে সাঁইথিয়া, আমোদপুর, বোলপুর-সহ বিভিন্ন জায়গার ৫ টি বেসরকারি লোন সংস্থার কাছে থেকে লোন নিয়েছিলেন লক্ষণবাবু। সেই লোন পরিশোধ করতে না পারায় বুধবার একটি বেসরকারি লোন সংস্থার তরফে আধিকারিকরা এসে ওই পরিবার কে অপমান ও হেনস্থা এবং বার বার চাপ দিতে থাকে বলে অভিযোগ। এমনকি, ঘরে তালা মারতে যায় লোন সংস্থার আধিকারিকরা। আর সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে করেন দু'জনে।
আরও জানা যাচ্ছে, তারা একটি বিয়ে বাড়িতে গেছিলেন সেখান। বাড়িতে টাকার জন্য লোক এসেছে জানতে পেরে স্বামী স্ত্রী দু'জনে পাশের গ্রামের বক্রেশ্বর নদীর ধারে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তারপর, লক্ষণ মুখোপাধ্যায় বাড়িতে ফোন করে জানান তাঁরা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করছেন। পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি গিয়ে দু'জনকে উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সন্ধ্যা নাগাদ দু'জনেরই মৃত্যু হয় হাসপাতালে। এই ঘটনার পর এলাকা জুড়ে নেমেছে শোকের ছায়া।
এ প্রসঙ্গে লক্ষণ বাবুর ভাই রামগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে অনেকদিন ধরে দাদার পরিবারে আর্থিক অনটন চলছিল। বেশ কিছুদিন ধরে লোনের কিস্তির টাকার চাপ বাড়ছিল, বলে শুনেছিলাম। কিন্তু এরকম ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারছি না।' অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে লাভপুর থানার পুলিস।