ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর আর বিতর্ক যেন সমার্থক হয়ে উঠেছে। ফের নতুন বিতর্কে জড়ালেন তিনি। আবার জেলা সভাপতিকে তোপ দেগেছেন হুমায়ুন। প্রসঙ্গত, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের উপর আক্রমণের প্রতিবাদে পথে নেমেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। রবিবার, ২৭ জুলাই গোটা রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নামে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তৃণমূলের প্রতিবাদ সভায় ফের মুখ খুললেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। একদা বাংলা ভাষা আন্দোলনের গ্রাম বাবলা। সালারের সেই বাবলা গ্রামে আবুল বরকতের মুর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভা থেকেই বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার ও জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমানকে তোপ দাগেন হুমায়ুন।
ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, অপুর্ব সরকার ও খলিলুর রহমান অমর্যাদা করলে তাঁদের বিরুদ্ধে হুমায়ুন কবীর প্রতিবাদ করবে। যেসব বন্ধুরা মনে করছেন হুমায়ুন কবীরকে বহিষ্কার করবে তাঁরা মুর্খের স্বর্গে বসবাস করছেন। হুমায়ুনের বক্তব্য, ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে বাঙালিদের হেনস্তা করা হচ্ছে। এই রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নাম মোটেই ভোটার তালিকায় ওঠেনি। সঠিকভাবে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হলে আপত্তি নেই। কিন্তু অযাচিত ভাবে যদি কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যায়, তাহলে কিন্তু চুপ করে বসে থাকবে না তৃণমূল কংগ্রেস।
ইডি-সিবিআই-এর মতো যদি বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে তাহলে মুর্শিদাবাদে বিজেপি নেতাদের বাড়ি থেকে বেরোতে দেব না। এমন হুমকিও দেন হুমায়ুন কবীর। প্রসঙ্গত দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে রাখা কয়েকটি দাবি আগামী ১৫ অগাস্টের মধ্যে পূরণ না হলে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন হুমায়ুন কবীর।
উল্লেখ্য ২০১১ সালে কংগ্রেসের টিকিটে প্রথমবার জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। কিন্তু এক বছরের মধ্যেই দলত্যাগ করে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। যদিও বিভিন্ন ইস্যুতে এরপর হুমায়ুনের সঙ্গে তৃণমূলের ঠোকাঠুকি লাগে এবং তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে রেজিনগর আসনে হুমায়ুন নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। এরপর কংগ্রেস এবং বিজেপি ঘুরে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের একবার হুমায়ুন তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করেন এবং ভরতপুর আসন থেকে লড়ার জন্য টিকিট পান। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই ভরতপুর-১ এবং ভরতপুর -২ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পরিবর্তনের দাবিকে ঘিরে হুমায়ুনের সঙ্গে দল এবং রাজ্য নেতৃত্বের ঠান্ডা লড়াই চলছিল। সম্প্রতি হুমায়ুন রাজ্য নেতৃত্বকে দুই ব্লক সভাপতি পরিবর্তনের জন্য ১৫ আগস্ট পর্যন্ত 'ডেডলাইন' বেঁধে দেন।
রিপোর্টারঃ সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়