Advertisement

মালিকের মেয়ে সেজে আস্ত বাড়ি বেচে দিল পরিচারিকা, শান্তিনিকেতনে কী কাণ্ড?

জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ শান্তিনিকেতনে নতুন নয়। এবার ভুয়ো আধার কার্ড ও বংশের নকল শংসাপত্র বের করে প্রবাসী বাঙালির বাড়ি-জমি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ পরিচারিকার বিরুদ্ধে৷ লিখিত অভিযোগ পেয়ে চন্দনা মাহারা নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ।

পদবী বদলে মেয়ের পরিচয়, শান্তিনিকেতনে মালিকেরই বাড়ি বিক্রি পরিচারিকারপদবী বদলে মেয়ের পরিচয়, শান্তিনিকেতনে মালিকেরই বাড়ি বিক্রি পরিচারিকার
সুচেতা কোনার
  • শান্তিনিকেতন,
  • 20 Mar 2025,
  • अपडेटेड 11:41 AM IST
  • চন্দনা মাহারা নিজের নামের পদবী 'মিত্র' করে ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করেন
  • সৌরীন্দ্রনাথ মিত্রের একমাত্র কন্যা দাবি করে বংশধর শংসাপত্র বা ওয়ারিশ সার্টিফিকেট বের করে নেন

জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ শান্তিনিকেতনে নতুন নয়। এবার ভুয়ো আধার কার্ড ও বংশের নকল শংসাপত্র বের করে প্রবাসী বাঙালির বাড়ি-জমি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ পরিচারিকার বিরুদ্ধে৷ লিখিত অভিযোগ পেয়ে চন্দনা মাহারা নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। শান্তিনিকেতনের অ্যান্ড্রুজ পল্লিতে বিশ্বভারতীর প্রয়াত প্রাক্তন অধ্যাপক সৌরীন্দ্রনাথ মিত্র ও দেবশ্রী মিত্রের বাড়ি। এই বাড়িতেই পরিচারিকার কাজ করতেন চন্দনা ৷ অভিযোগ, বাড়ির মালিকদের মৃত্যুর পর 'মিত্র' পদবি নিয়ে নকল আধার কার্ড ও বংশের শংসাপত্র বের করে বাড়ি-জমি বিক্রি করে দেন তিনি৷ আমেরিকায় থাকতে এই খবর পান বাড়ির মালিকের ছেলে সৌম্যশঙ্কর মিত্র ৷ তারপর তিনি অভিযোগ দায়ের করেন।

বিশ্বভারতীর ইংরাজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন সৌরীন্দ্রনাথ মিত্র। ১৯৮৫ সালে তিনি অবসর নেন৷ শান্তিনিকেতনের অ্যান্ড্রুজ পল্লিতে প্রায় ১০ কাঠা জমির উপর তিনি একটি বাড়ি করেছিলেন৷ ১৯৮৯ সালে তিনি প্রয়াত হন৷ সেই সময় এই বাড়িতে থাকতেন তাঁর স্ত্রী দেবশ্রী মিত্র ও তাঁদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। বাড়ির তিন সন্তানই এখন কর্মসূত্রে বাইরে৷ প্রয়াত অধ্যাপক সৌরীন্দ্রনাথ মিত্রের ছেলে সৌম্যশঙ্কর মিত্র। তিনি যোগমায়াদেবী কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক। তিনি জানান, তাঁদের শান্তিনিকেতনের বাড়িতে মালির কাজ করতেন বোলপুরের শ্রীনিকেতনের বাসিন্দা মন্টু মাহারা ৷ তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী মাহারাও এই বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন ৷ সেই সুবাদে তাঁদের বড় মেয়ে চন্দনা মাহারার এই বাড়িতে যাতায়াত ছিল৷ বাড়ির মালিক সৌরীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর দেবশ্রী মিত্রের দেখভাল করতেন চন্দনা৷ ২০২১ সালে কোভিডের সময় মৃত্যু হয় দেবশ্রীর৷

দেবশ্রীর মৃত্যুর পর থেকে বাড়িতে থাকতেন চন্দনা ও তাঁর স্বামী ৷ আগে উৎসব-অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝে সৌম্যশঙ্কর মিত্র ও তাঁর দুই বোন মধুশ্রী মিত্র, ভাস্বতী মিত্র শান্তিনিকেতনের বাড়িতে আসতেন। সদ্য সেসব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ কারণ, সৌম্যশঙ্কর মিত্র আমেরিকায় গিয়ে মেয়ের কাছে বসবাস করছিলেন৷ অভিযোগ, সেই সুযোগ নিয়ে এই চন্দনা মাহারা নিজের নামের পদবী 'মিত্র' করে ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করেন ৷ তাঁর আগের আধার কার্ডে 'মাহারা' পদবিই রয়েছে। এমনকী স্কুল সার্টিফিকেটেও 'মাহারা' পদবি জ্বলজ্বল করছে। শুধু তাই নয়, বোলপুর পুরসভা থেকে 'মিত্র' পদবি নিয়ে চন্দনা মাহারা নিজেকে অধ্যাপক সৌরীন্দ্রনাথ মিত্রের একমাত্র কন্যা দাবি করে বংশধর শংসাপত্র বা ওয়ারিশ সার্টিফিকেট বের করে নেন৷ এগুলো নিয়ে অ্যান্ড্রুজ পল্লির বাড়িটি বিক্রি করে দেন ৷ জমি ও বাড়ির বর্তমান বাজার দর কমপক্ষে ১ কোটি টাকা। নিজেদের বাড়ি বিক্রির খবর পান সৌম্যশঙ্কর মিত্র। তারপরেই তিনি শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে চন্দনা মাহারা নামে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

আরও পড়ুন

সংবাদদাতা- শান্তনু হাজরা

Read more!
Advertisement
Advertisement