
মুর্শিদাবাদের কান্দির পর এবার বহরমপুর। আত্মহত্যা করলেন এক ঝালমুড়ি বিক্রেতা। ৫৪ বছরের ওই ব্যক্তির নাম তারক সাহা। বাড়ি বহরমপুর পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের গান্ধী কলোনিতে। মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ, SIR আতঙ্কে ভুগছিলেন তাঁর স্বামী। তাঁর নাম ছিল না ২০০২ সালের ভোটার তালিকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বহরমপুর থানার পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে কাজে বেরিয়েছিলেন প্রিয়া সাহা। বাড়িতে একাই ছিলেন তারক সাহা। বেলা বারোটা নাগাদ কাজ থেকে ফিরে এসে প্রিয়া দেখেন, বাড়ির ফুলগাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছেন তাঁর স্বামী। ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকাবাসীরা আসেন। খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিহতের প্রতিবেশীদের দাবি, কয়েকদিন ধরেই আতঙ্কে ভুগছিলেন তারক সাহা। তিনি এই নিয়ে পড়শিদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে নথি নেই। ২০০২ সালের ভোটার তালিকাতেও নাম নেই।
এদিকে প্রিয়া সাহা বলেন, 'কয়েকদিন ধরেই দুশ্চিন্তায় ছিল আমার স্বামী। বুধবার রাতেও সে আতঙ্কে ভুগছিল। বলছিল, ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে। বন্ধুদেরও একই কথা বলেছিল। সকালে কাজে বেরিয়েছিলাম। দুজনেই কাজ করতাম। ও বাড়ি থেকে বেরোইনি। কিন্তু আমি ফিরে এসে দেখি এই কাণ্ড। SIR আতঙ্কেই ও গলায় দড়ি দিয়েছে।'
ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে আসেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। তাঁদের তরফে মৃত ব্যক্তির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। বহরমপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত প্রামাণিক জানান, 'বিজেপির চক্রান্তের জন্য মানুষ মারা যাচ্ছে। SIR আতঙ্কে তারক সাহা আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা পরিবারের পাশে সবরকমভাবেই থাকব। সাধারণ মানুষকে বলেছি, কোনও চক্রান্তে পা না দিতে।'
প্রসঙ্গত, ২ দিন আগেই কান্দির এক কৃষকও আত্মঘাতী করেছিলেন। পরিবারের দাবি, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না তাঁর। সেই আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন ৪৫ বছরের মহুল শেখ। এছাড়াও উলুবেড়িয়া-সহ একাধিক জায়গায় কয়েকজন আত্মহত্য়া করেন। সেজন্যও রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে আক্রমণ করা হয় বিজেপিকে।