
তিনিও ছোবল মারতে জানেন। তার লেজে পা দিলে ছোবল খেতে হবে। বুধবার এক সমাবেশে দাঁড়িয়ে দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে হুঙ্কার হুমায়ুন কবীরের।
ভরতপুরের এই বিধায়ক বলেন, 'সম্মান দিয়ে নেতৃত্বের জন্য এখনও অপেক্ষা করছি। আমাদের লেজে পা দিলে, আমরাও ছোবল মারতে জানি।'
এছাড়া তিনি তৃণমূলকে সময় দিয়েছেন মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এই সময়ের মধ্যে তিনি মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক রং বদলে দেবেন বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, '...দল যদি মনে করে অসভ্য ব্যক্তিদের দরকার নেই, তাহলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেখিয়ে দেব মুর্শিদাবাদের রাজনীতির রং ঠিক কীভাবে পাল্টাবে।' অর্থাৎ সোজাসুজি দলকেই চ্যালেঞ্জ দিয়ে বসলেন এই নেতা।
বারবার হুমায়ুনকে নিয়ে বিড়াম্বনায় তৃণমূল
মুর্শিদাবাদের নেতা হুমায়ুন কবীরকে নিয়ে দীর্ঘদিন সমস্যায় রয়েছে তৃণমূল। একাধিকবার তাঁকে মুখ খুলতে বারণ করা হয়েছে। তবে সেই বারণে থোরাই কেয়ার হুমায়ুনের। তিনি বারবারই প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। এমনকী দলকেও দিয়েছেন চ্যালেঞ্জ। নতুন দল ঘোষণা করতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। আর সেই ধারা এখনও বয়ে চলেছে।
ইতিমধ্যেই হুমায়ুনকে নিয়ে তৃণামূলের শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখান থেকে এই নেতাকে চুপ থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। যদিও তাঁকে সাসপেন্ড করা বা দল থেকে বের করে দেওয়ার কোনও নির্দেশ সামনে আসেনি।
এ দিন কী বলেন তিনি?
আসলে বুধবার এসআইআর নিয়ে তৃণমূলের ওয়াররুম খোলা হয় ভরতপুরে। তার উদ্বোধন করেন হুমায়ন। তারপর চলে যান একটি সভায়। সেখানে নিজের বক্তৃতায় তিনি বলেন, 'আমরা কাউকে আগে আঙুল দেখাই না। কিন্তু আমাদের উপর আঙুল তুললে আমরা দুই আঙুল তুলে দেখাব। ইঁট ছুড়লে পাথরে দেওয়া হবে জবাব। এতদিন অনেক কিছু মুখ বুঁজে সহ্য করেছি।'
নেতার বিরুদ্ধে বিস্তর ক্ষোভ
কান্দির বিধায়ক তথা তৃণমূলের বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব সরকারের বিরুদ্ধে বারবারই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন হুমায়ুন। আর এ দিনও তার অন্যথা হল না। তিনি বলেন, 'নেতাগিরি করব, আর ভোটের বেলায় তৃণমূলে তিন নম্বর থাকব। কান্দিতে তিন নম্বর, বহরমপুর পুরসভায় তিন নম্বর, তারা আমাদের নেতা হবে। আমাদের চুল চেপে অর্ডার দেবে, তা আমরা মানব না।'
এর পাশাপাশি তিনি ২০২৩ সালের ভোটে অরাজকতা প্রসঙ্গটিও তোলেন। তাঁর দাবি, ওই নির্বাচনে সালারে টাকার বিনিময়ে নির্বাচন হয়। ভরতপুরের ওসিকেও করা হয় ব্যবহার। যার ফলে গণনাকেন্দ্রে অরাজকতা তৈরি হয়।
যদিও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এই বিষয়টা নিয়ে কোনও মুখ খোলা হয়নি। এখন দেখার ৪৮ ঘণ্টা পর হুমায়ুন ঠিক কী স্টেপ নেন।