
২০ ডিসেম্বরের পর তিনি ঘোষণা করবেন দল। সেটির নামও তখনই জানাবেন। এমনকী সেই দলের চেয়ারম্যানও হবেন তিনি। এছাড়া মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, মালদা, নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনায় প্রার্থীও দিতে পারেন তিনি। এমনটাই ঘোষণা করলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।
এখানেই থেমে না থেকে তিনি আরও জানান, এ বার তিনি একা লড়বেন না। বরং তিনি সঙ্গে নেবেন আইএসএফ, বামেদের। পাশাপাশি প্রয়োজন হলে তিনি কংগ্রেসকেও বাদ দেবেন না। আর হুমায়ুনের এহেন দাবি নিয়ে আপাতত উত্তাল মুর্শিদাবাদের রাজনীতি। তৃণমূলের এই বিদ্রোহী নেতা ২০২৬ ভোটের আগে ঠিক কী পদক্ষেপ নেন, সেটার দিকেই তাকিয়ে গোটা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
২০১৬-তেও এমনটা করেছিলেন
দল থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীনভাবে লড়ার বিষয়টা নতুন কিছু নয় হুমায়ুন কবীরের কাছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটেও তিনি এই কাজটা করেছিলেন। নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর ছিনিয়ে এনেছিলেন জয়। আর সেই ঘটনারই পুনরাবৃ্ত্তী করতে চাইছেন তিনি। নতুন দল করে মুর্শিদাবাদের রাজনীতিতে নিজের দাপট বজায় রাখতে চাইছেন এই নেতা বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
দল খোলার চেষ্টা করছিলেন ১৫ অগাস্ট
এই বছরের অগাস্ট মাসেই দল তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন হুমায়ুন। সেই মতো ঘোষণাও করে দেন। তবে সেই দল ঘোষণার আগেই তাঁকে ডাকা হয় ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে। সেখানে হয় বৈঠক।
এই বৈঠক সম্পর্কে হুমায়ুন জানান, ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের নীলিমেশ বিশ্বাস। ইনি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। আর সেই নীলিমেশই নাকি হুমায়ুনের নামে ভুল তথ্য দেন বলে এ দিন জানান তিনি। যার ফলে পরিস্থিতি বিগড়ে যায়।
তাই তাঁর ঘোষণা, 'এসব নিয়ে অনেক অভিযোগ করেছি। কিন্তু কিছুই লাভ হয়নি। এই দুর্ব্যবহার মনে পুষে রেখে আর থাকতে পারছি না। ৬ ডিসেম্বর ইচ্ছা রয়েছে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করার। তারপর ২০ ডিসেম্বরের পর নতুন দল তৈরি করব।’
চিরকালই বিরোধীতা করছেন
হুমায়ুনকে নিয়ে চিরকালই চাপে থাকে শাসক দল। তাঁরা তথাকথিত বিস্ফোরক বক্তব্যে তৃণমূল বেকায়দায় পড়ে। আর এখনও সেই ধারা অব্যাহত। এই তো দুই দিন আগে তিনি একটি সমাবেশে দাঁড়িয়ে দলকে মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন। তার মধ্যে যদি কোনও বার্তা না আসে, তাহলে মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক রং বদলে দেবেন বলে ঘোষণা করেন।
এছাড়া তিনি বলেন, 'সম্মান দিয়ে নেতৃত্বের জন্য এখনও অপেক্ষা করছি। আমাদের লেজে পা দিলে, আমরাও ছোবল মারতে জানি।'
ও দিকে কান্দির বিধায়ক তথা তৃণমূলের বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব সরকারের বিরুদ্ধে বারবারই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, 'নেতাগিরি করব, আর ভোটের বেলায় তৃণমূলে তিন নম্বর থাকব। কান্দিতে তিন নম্বর, বহরমপুর পুরসভায় তিন নম্বর, তারা আমাদের নেতা হবে। আমাদের চুল চেপে অর্ডার দেবে, তা আমরা মানব না।' তাই তিনি এখন নতুন দল তৈরির করার পথেই এগচ্ছেন। এখন দেখার তাঁর সেই চেষ্টা কতটা সফল হয়।