
২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না। সেই আতঙ্কে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এরপর সোমবার সকালে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান এক বৃদ্ধ। ঘটনা নদিয়া জেলার তাহেরপুরের পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণচকপুর মণ্ডলপাড়ার। ওই বৃদ্ধের নাম শ্যামল কুমার সাহা (৭২)। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, SIR আতঙ্কে ভুগছিলেন তিনি। দেশ ছাড়তে হবে সেই আশঙ্কা করছিলেন।
প্রায় ৩০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এদেশে আসেন শ্যামল কুমার সাহা। তাঁর জমি-জায়গার কাগজপত্র আছে। রয়েছে আধার কার্ডও। কিন্তু ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না তাঁর। পরিবারের অভিযোগ, সেই জন্য আতঙ্কিত ছিলেন তিনি।
শ্যামল কুমার সাহার দুই সন্তান। তাঁরা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বাবার সঙ্গেই থাকতেন। ওই বৃদ্ধ নিজে পোশাক ফেরি করতেন। কিন্তু SIR শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে দেন বলে দাবি পরিবারের। সেই থেকে বিরক্ত থাকতেন, মানসিক অবসাদে ভুগতেন। পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করতেন। সম্প্রতি তাঁদের বাড়িতে SIR-এর ফর্ম দিয়ে আসেন BLO।
মৃতার স্ত্রী বলেন, তাঁর স্বামী খুব দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। আধার কার্ড ও দলিল আছে। কিন্তু ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না। সেই জন্য বাড়িতে কথাবার্তা কমিয়ে দিয়েছিলেন। খুব বিরক্ত হয়ে থাকতেন। সোমবার সকালে মারা যান। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রসঙ্গত, SIR শুরু হওয়ার পর থেকে রাজ্যে একাধিক আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। মুর্শিদাবাদ, হাওড়া-সহ একাধিক জেলার বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। তৃণমূলের অভিযোগ, SIR আতঙ্কে প্রাণ গিয়েছে সেই সব মানুষের। এর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।
আবার রবিবার পূর্ব বর্ধমানের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নমিতা হাঁসদা মারা যান। বিএলও হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তাঁর স্বামী দাবি করেছেন, নমিতাকে অত্য়াধিক কাজের চাপ দেওয়া হচ্ছিল। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই মৃত্যু।