স্যালাইন-কাণ্ডে এবার প্রাণ গেল অসুস্থ প্রসূতির সদ্যোজাতর। মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি থাকা রেখা সাউয়ের সদ্যোজাত সন্তানের মৃত্যু ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে। ভেন্টিলেশনে টানা সাত দিন লড়াইয়ের পর অবশেষে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই মৃত্যু হল শিশুটির। ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
হাসপাতালে সূত্রে খবর, জন্মের পর থেকে কাঁদেনি শিশুটি। কিডনির রোগ, জন্ডিস-সহ একাধিক রোগে ভুগছিল। এদিন তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মাতৃমা বিভাগে মারা যায় রেখা সাউয়ের শিশুসন্তান। আগেই স্যালাইন-কাণ্ডে মেদিনীপুর মেডিক্যালেই মৃত্যু হয়েছিল এক প্রসূতি মামনি রুইদাসের। আর এক প্রসূতি রেখা বর্তমানে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।
এক সপ্তাহ আগে বৃহস্পতিবারই রেখার কোল আলো করে এসেছিল শিশুটি। জুনিয়র ডাক্তারদের অস্ত্রোপচার, স্যালাইনকাণ্ডের আবহে যে পাঁচ প্রসূতি বারবার শিরোনামে উঠে আসেন, সেই তালিকায় ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা সংলগ্ন খাকুড়দার বাসিন্দা রেখা। রেখার চিকিৎসা মেদিনীপুর মেডিক্যালেই চলছিল। হাসপাতালের এইচডিইউ বিভাগে তিন দিন চিকিৎসা চলার পরে এখন অনেকটাই সুস্থ আছে রেখা। তবে রেখা সুস্থ হয়ে উঠলেও গত ৮ জানুয়ারি জন্মানোর পর থেকেই ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁর সন্তানকে। জন্মের পর থেকে সন্তানের মুখ দেখেননি বাবা সন্তোষ সাউ এবং মা রেখা। ঠাকুমা পুষ্প সাউ বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, “জন্মের পর এক বার দেখিয়েছিল। তার পর আর দেখিনি, কাচের ঘরে ছিল। ময়নাতদন্তের পর দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে।” এই ঘটনায় এবার আর সিআইডি নয় সিবিআই তদন্তের দাবি করছে মৃত নবজাতকের পরিবার।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার অর্থাৎ ৮ জানুয়ারি রাতে সিজারিয়ান সেকশন হওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন পাঁচ প্রসূতি। এদের মধ্যে মারা যান মামনি রুইদাস। বাকি চারজনের মধ্যে তিনজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের গ্রিন করিডর করে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। সেখানেই চিকিৎসাধীন এই তিন প্রসূতি। বাকি একজন অর্থাৎ এই রেখা সাউ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এইচডিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকাল ন’টা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর সদ্যোজাত শিশুপুত্রের। পরিবারের অভিযোগ, সিজারিয়ান সেকশনের বিষ স্যালাইন দেওয়ায় দ্রুত অবস্থার অবনতি হয় রেখার। এরপর হাসপাতালের বাইরের থেকে তাঁদের স্যালাইন কিনেও আনতে হয়। আর এই বিষ স্যালাইনের জন্য মৃত্যু হয়েছে তাঁদের শিশু পুত্রের দাবি পরিবারের। তবে ঠিক কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা পরবর্তীতে শারীরিক পরীক্ষার পর জানা যাবে।