আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে একের পর এক হাসপাতালে সিনিয়র ডাক্তাররা গণইস্তফা দিচ্ছেন। এহেন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ' সার্ভিস রুল অনুসারে, ইস্তফাপত্র অবশ্যই ব্যক্তিগত ভাবে দিতে হয়। না হলে সেটি পদত্যাগপত্র নয়।' আলাপনের এই বক্তব্যকে নিশানা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কটাক্ষ, ডাক্তাররা চলে যাক, এটা চাইছে। আসলে এরা তো বিদেশে চিকিত্সা করায়।
'ইস্তফাপত্র অবশ্যই ব্যক্তিগত ভাবে দিতে হয়'
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ও ১০ দফা দাবিতে জুনিয়র ডাক্তাররা টানা অনশন করছেন। একাধিক ডাক্তার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদে সামিল সিনিয়র ডাক্তারাও। যার নির্যাস, আরজি কর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ সহ একের পর এক সরকারি হাসপাতালে গণইস্তফা দিচ্ছেন সিনিয়র ডাক্তাররা। নবান্নের তরফে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্ত জানিয়েছেন, তিনি ইস্তফার কোনও চিঠি পাননি। শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'প্রতিটি ক্ষেত্রেই গণইস্তফা-র কথা উল্লেখ রয়েছে। সার্ভিস রুল অনুসারে, ইস্তফাপত্র অবশ্যই ব্যক্তিগত ভাবে দিতে হয়। না হলে সেটি পদত্যাগপত্র নয়। এই ‘গণইস্তফা’ কোনও গ্রাহ্য পদত্যাগ নয়। এই বিষয়ে সরকার বিভ্রান্তি দূর করতে চায়। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে এগুলি জমা পড়েছে।'
এরা চাইছে ডাক্তাররা চলে যাক
আলাপনের বক্তব্যকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলছেন, 'কাল যে ভাষায় আলাপনবাবু বললেন, তাতে বোঝা গেল, উনি ডাক্তারদের পদত্যাগ করতে বলছেন, কিন্তু সার্ভিস রুল মেনে। ডাক্তাররা চলে যাক চাইছে। আসলে এরা তো বিদেশে চিকিত্সা করায়। প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হয়। সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়। আমার বাড়ির লোকরা সরকারি হাসপাতালে যায় না, প্রাইভেটে চিকিত্সা করায়। আমার সামর্থ আছে। কিন্তু ৯০ শতাংশ লোক তো সরকারি হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির লোকরা তো বিদেশে যায় চিকিত্সা করাতে, আমেরিকা যায়। ডাক্তারদের বলছে, তোমরা সার্ভিস রুল মেনে পদত্যাগ কর। সমস্ত সরকারি হাসপাতাল জুনিয়র ডাক্তারদের উপর নির্ভরশীল। আর ওদের দাবির মধ্যে তো সরকার পরিবর্তনের দাবি নেই। তাহলে সমস্যা ছিল, পদ চলে যাবে, চেয়ার ধরে টানছে। এত দম্ভ ভাল না।'
গণইস্তফা শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার
আরজি কর এবং অন্যান্য হাসপাতাল মিলিয়ে একাধিক ‘গণইস্তফা’-র চিঠিতে এখনও পর্যন্ত দুশোর কিছু কম সই জমা পড়েছে বলেও সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন আলাপন। গত মঙ্গলবার আরজি কর হাসপাতালের ৫০ জন সিনিয়র ডাক্তার প্রথমে গণইস্তফা দেন। তারপর কলকাতা মেডিক্যাল, ন্যাশনাল মেডিক্যাল, এসএসকেএম হাসপাতাল, সাগর দত্ত মেডিক্যাল, এনআরএস-সহ বিভিন্ন হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারেরাও একে একে গণইস্তফা দিতে শুরু করেন।