পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মানচিত্রে কার্যত লালদাগ দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়ার মতো জায়গা পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম। বাম আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন হোক বা তৃণমূলের জমানায় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইতে নেমে তৃণমূল নেত্রীর পরাজয়, বারেবারেই বঙ্গ রাজনীতির অলিন্দে ঘুরে ফিরে এসেছে এই নামটি। এবার ফের একবার আলোচনার কেন্দ্রে পূর্ব মেদিনীপুরের এই জায়গা।
নন্দীগ্রামের দীনবন্ধুপুর সমবায় সমিতির নির্বাচন ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে নন্দীগ্রামে। জানা গিয়েছে, আগামী ৫ জানুয়ারি ওই সমবায় সমিতির প্রতিনিধি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তৃণমুল-বিজেপি দুই দলের সমর্থিত প্রার্থীরা আসন ভাগাভাগি করে নেওয়ায় সেখানে আর ভোট হচ্ছে না। জানা গিয়েছে, এই সমবায় সমিতির ৫০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৩২টি আসন এবং বিজেপি ১৮টিতে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। সেখানকার মোট সদস্য সংখ্যা ১,২৫৮ জন। প্রতি ২৫ জন সদস্য পিছু একজন প্রতিনিধি। গত ৯ ও ১০ ডিসেম্বর ওই সমবায় সমিতির ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন ছিল। ৫০টি আসনের জন্য দু'দলের পক্ষ থেকে মোট ৬২টি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়। ১২ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন। বিরোধীদের অভিযোগ সেই দিনই তৃণমুল ও বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা বোঝাপড়া করে ৫০টি আসনে একজন করে প্রার্থী দেয়। বাকিদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ফলে দীনবন্ধুপুর সমবায় সমিতির ৫০টি আসনের মধ্যে ৩২টিতেই তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা এবং ১৮টিতেই বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন সেখানকার সিপিআইএম নেতৃত্ব।
যদিও, প্রকাশ্যে এই সমঝোতার অভিযোগ অবশ্য মানতে চায়নি তৃণমূল বা বিজেপি কেউই। এই প্রসঙ্গে, বিজেপি নেতৃত্বদের দাবি, স্থানীয় স্তরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ভোটের খরচ বাঁচানোর জন্য। আর তৃণমূল বলছে, তারা জয়ী হয়েছে, এটাই বড় খবর।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে এই নন্দীগ্রামে তৃণমূল-বিজেপির দ্বৈরথ দেখেছে গোটা দেশ। রাজনৈতিক শত্রুতায় এখনও মাঝেমধ্যেই এখানে রক্ত ঝরে। তারই মাঝে এমন ঘটনায় উত্তাপ ছড়িয়েছে স্থানীয় রাজনীতিতে।