একুশে জুলাইয়ের সমর্থনে সভায় দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি। শনিবার, ১৯ জুলাই শিবরামপুরের সভা থেকে কল্যাণ বলেন, 'দেশের গণতন্ত্রকে যে নষ্ট করতে চাইছে তাঁর নাম হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী। নরেন্দ্র মোদী প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্মে চলে যেতে চাইছেন। ওয়ান নেশান, ওয়ান ভোট। একটাই দেশ একটাই নির্বাচন, এ হতে পারে কখনো? গণতন্ত্রের মূল ক্ষমতা হচ্ছে মানুষ। সেই মানুষের অধিকার যখন কেড়ে নেওয়া হয়,তখন গণতন্ত্রকে খর্ব করা হয়। পুরো সংবিধানটাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে চাইছে।'
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, মোদীজি আপনাকে আর আপনার লোকেরা সহ্য করতে চাইছে না। তাঁরা বুঝে গিয়েছে আপনার হাতে গণতন্ত্র বিপন্ন। তাইতো মোহন ভগবত বলেছেন ৭৫ বছর পর আর কারও রাজনীতিতে থাকা উচিত নয়। আপনার সময় হয়ে গিয়েছে। সেইসঙ্গে শ্রীরামপুরের সাংসদ আরও বলেন, কেন ভারতবর্ষের প্রধান বিচারপতি বা অন্য বিচারপতিদের কেন্দ্রীয় সরকারের মুখাপেক্ষী হতে হবে? ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের অন্যতম কাঠামো হচ্ছে বিচার ব্যবস্থা। সেই বিচার ব্যবস্থাকে ভেঙে দিলে আর কী থাকবে? অনেক বিচারপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, কারণ তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের মনের মতো নয় তাই। বিচারক যখন বলেন, রক্ষক কখনো ভক্ষক হতে পারে না আমি সে কথা মানি। বিচারক যখন আইনের বাইরে গিয়ে, জাজমেন্টের বাইরে গিয়ে কোনও অর্ডার দেন তখন তাহলে আপনি কোথায় থাকলেন। এই বিচারটা কে করবে। ভারতবর্ষের গণতন্ত্র সেই জায়গায় আটকে আছে। গণতন্ত্রকে যে নষ্ট করতে চাইছে তাঁর নাম হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী।
এদিনের সভা থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও নিশানা করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণ বলেন, 'যদিও ভগবানের মধ্যে কখনো লবি হয় না। তবে মায়ের লবি, শ্রীরামের লবি হলে আমি মায়ের লবিতে থাকবো। বাংলায় কোনও ভাগাভাগি হবে না। আমরা মায়ের ভক্ত। আমরা মায়ের লোক। যে মা জন্ম দিয়ে পালন করেছে, বলেছেন মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ দেখবে না। মানুষকে নিয়ে চলা তবেই না রাজনীতি। আমি কোনওদিন শুনিনি এরকম এমন কোনও রাজনীতিবিদ নেতা হয়, যে স্বপ্ন দেখে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার, সে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে। একমাত্র শুভেন্দু অধিকারী আছে, তা ছাড়া কেউ নেই।' কল্যাণ আরও বলেন, 'আপনি বলে গিয়েছেন শ্রীরামপুরে কোথায় কোথায় হারি আমি, শ্রীরামপুর লোকসভার একটা বিধানসভাতেই আমি জিতেছি। এখানে হিন্দুরা আছে। তাঁর চ্যালেঞ্জ নিলাম,শ্রীরামপুর লোকসভার কোনও বিধানসভা থেকে দাঁড়াবি দাঁড়া, তোকে হারিয়ে ভূত করে দেব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কীসের চ্যালেঞ্জ নিচ্ছিস? আগে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ কর। কতবড় বাপের ব্যাটা দেখতে চাই আমি। তুই যে বলিস মোদীর বাচ্চা। আয় দেখা যাবে মোদীর বাচ্চা না শিশিরের বাচ্চা। কোন হিন্দু এলাকা বাছবি। পুরো প্যাক করে পাঠিয়ে দেব। কল্যাণ ব্যানার্জিকে একটা বললে দশটা শুনতে হবে। আমি তোর মতো বড় লোকের ব্যাটা নই। আমার নাম কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়া থেকে এসে পশ্চিমবঙ্গে নিজের হিম্মতে উঠেছি। তোর মতো নই। 'পাশাপাশি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন,শ্রীরামপুর আসনের যত লোক আছেন,তাঁরা তাঁকে আগলে রাখেন।