
২০২৬-এর বিধানসভা ভোটে বাংলায় বিজেপি কটা সিট পাবে, তা নির্বাচনের আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করে দিলেন বাংলার মন্ত্রী। শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের জামুরিয়া টাউন হল সংলগ্ন ময়দানে জনসভা করে তৃণমূল কংগ্রেস। যেখানে তিনদিন আগেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বুথ কর্মী সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। আর সেখানে রাজ্য সরকার ও শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছিলেন। এদিন ঠিক একই জায়গায় জনসভা করল TMC। এই সভায় যোগ দিয়েছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক, পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, জামুরিয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি-সহ শাসক দলের একাধিক নেতা-কর্মী।
তৃণমূলের সভা থেকে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, শুভেন্দু অধিকারী কী প্রেডিকশন করলেন, তাতে কিছু আসে না। এই ধরনের প্রেডিকশন ওদের রাজনৈতিক গুরু অমিত শাহ ২০২১ সালেও করেছিলেন। ২০০ আসনের কথা বললেও বিজেপি পেয়েছিল মাত্র ৭৭টি আসন। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির আসন সংখ্যা আরও কমবে। এবার বিজেপির আসন ৩০ থেকে ৩৫-এ নেমে যাবে, তার থেকেও কম হতে পারে। কিন্তু এর চেয়ে বেশি নয়। সভা শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বিজেপি ও শুভেন্দু অধিকারীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছে বিজেপি বাংলা বিরোধী। সাড়ে তিন বছর ধরে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ রেখেছে, আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। প্রায় ১ লক্ষ ৯৫ হাজার কোটি টাকা বাংলাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যারা বাংলার মানুষকে ভাতে মারতে চায়, পেটে মারতে চায়, তাদের বাংলায় কোনো জায়গা নেই।
শুভেন্দু অধিকারীর জামুরিয়ায় একের পর এক সভা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনি পাড়ায় পাড়ায়, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সভা করলেও জামুরিয়াতে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল ভোটে জিতবে। পাশাপাশি বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, উন্নয়ন বা নীতিগত কোনো আলোচনা না করে কেবল কুৎসাই বিজেপির রাজনীতির অস্ত্র হয়ে উঠেছে। এমন নিম্নমানের বিরোধী দলনেতা স্বাধীনতার পর আগে কখনও দেখা যায়নি, মন্তব্য করেন তিনি। SIR প্রসঙ্গে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, বিজেপি শুধু ভয় ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারীর আগের মন্তব্যের কথা তুলে ধরে তিনি প্রশ্ন তোলেন, SIR-এর অনেকটা প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেল। একটা রোহিঙ্গা বা একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী কি ধরা পড়েছে? এমনকি বিহারেও কিছু পাওয়া যায়নি। এর মানে বিজেপির কাছে কোনো উন্নয়নের এজেন্ডা নেই বলেই তারা মিথ্যে অপপ্রচার করছে।
অপরদিকে, শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, শুভেন্দু অধিকারী যদি এখানকার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরেও সভা করেন, বিজেপি এখানে জিতবে না। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কোনও আসন পাবে না। কেননা আসানসোলে অগ্নিমিত্রা পাল জেতার পর তাঁকে সাড়ে চার বছর এলাকায় দেখা যায়নি। যখন ভোট এসেছে তথন পাখির মত এলাকায় ঘোরা শুরু করে দিয়েছেন। মানুষ এদের ভোট দেবে না। মন্ত্রী স্পষ্ট করেন, এইসব চক্রান্ত ও অপপ্রচার করেও বিজেপি কোনো লাভ করতে পারবে না, কারণ বাংলার মানুষ সব বুঝে তৃণমূল কংগ্রেসের পাশেই রয়েছে।
রিপোর্টার- অনিল গিরি