পূর্ব ভারতের রেলযাত্রার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। আগামী সোমবার থেকে যাত্রীদের জন্য চালু হচ্ছে সম্পূর্ণ এসি লোকাল ট্রেন, যা প্রথমবারের মতো পূর্বাঞ্চলে চালু হচ্ছে। শিয়ালদা-রানাঘাট লাইনে চালু হওয়া এই এসি লোকাল ট্রেন আধুনিক অবকাঠামো ও যাত্রী-সুবিধায় পূর্ণ, যা ট্রেনযাত্রাকে করবে আরও আরামদায়ক ও প্রযুক্তিনির্ভর।
রেল সূত্রে জানা গেছে, এই এসি লোকাল ট্রেনটি ১২টি পূর্ণবাতানুকূল কামরায় বিভক্ত, যা তৈরি হয়েছে স্টেনলেস স্টিল দিয়ে। বাইরে থেকে দেখতে একেবারে মেট্রোর মতো, এবং ভেতরের গঠনও অনেকটাই মেট্রোর আদলে। একটি কামরা থেকে অন্য কামরায় যাতায়াতের সুবিধা, স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং দরজা, সিসি ক্যামেরা, জিপিএস নিয়ন্ত্রিত আধুনিক প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম, এবং অ্যালুমিনিয়ামের মালপত্র রাখার তাক—সবই রয়েছে এতে।
প্রতিটি কামরায় রয়েছে ১১২৮টি আসন, যাত্রীদের বসা ও দাঁড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা এবং গ্রীষ্মের তীব্র গরমে যাতায়াতকে আরামদায়ক করে তুলতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা। ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতি হবে প্রতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার।
ভাড়ার তালিকা:
শিয়ালদা-দমদম: ৩৫ টাকা (মাসিক পাস ৬২০ টাকা)
শিয়ালদা-ব্যারাকপুর: ৬০ টাকা (মাসিক পাস ১২৭৫ টাকা)
শিয়ালদা-নৈহাটি: ৯০ টাকা (মাসিক পাস ১৮১০ টাকা)
শিয়ালদা-রানাঘাট: ১২০ টাকা (মাসিক পাস ২৪৩০ টাকা)
এই পরিষেবা শুরু হলে কলকাতা এবং শহরতলির বহু কর্মজীবী মানুষ উপকৃত হবেন বলে আশাবাদী রেল কর্তৃপক্ষ। বিশেষত গ্রীষ্মের সময় ঘেমে-নেয়ে ভিড় ট্রেনে যাতায়াতের ক্লান্তি অনেকটাই কমবে।
প্রথম মুম্বই ও পরে চেন্নাইয়ে চালু হয়েছিল এই এসি লোকাল পরিষেবা। এবার বাংলার মানুষও পাচ্ছেন সেই অভিজ্ঞতা। রেলের এই পদক্ষেপ নাগরিক পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার পথে এক বড় দিকচিহ্ন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।