মন্দিরার জীবনের কাহিনী যেন কঠিন লড়াইয়েও হার না মানার চরমতম উদাহরণ। এবারেই উচ্চ মাধ্যমিক দেবেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের মন্দিরা সিংহ। পড়াশোনার পাশাপাশি সংসার চালাতে রাস্তায় ধূপ বিক্রি করেন মন্দিরা। বাবা লটারির টিকিটের ব্যবসা করেন। পরিবারে মা, বাবা আর ছোট ভাই—তাদের খরচ সামলানোর জন্যই এই লড়াই।
২০২৩ সালে মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন মন্দিরা। বারাসাত প্রিয়নাথ গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী। গত এক বছর ধরে ধূপকাঠি বিক্রি করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছিলেন তিনি। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সকালে ও রাতে পড়াশোনা। দিনের বাকি সময় সংসারের কাজ সামলে ধূপ বিক্রিতে বেরিয়ে পড়েন মন্দিরা।
মছলন্দপুরে ধূপকাঠি বিক্রি করার সময় মন্দিরাকে দেখেন সমাজসেবী বিশ্বজিৎ কুন্ডু। বিষয়টি শিল্পী সুজিত সাহাকে জানান তিনি। এরপর দু'জন মিলে সিদ্ধান্ত নেন মন্দিরার পাশে দাঁড়ানোর। তাঁর হাতে তুলে দেন বোর্ড, পেন, স্কেল, জলের বোতল ও কিছু টাকা। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন, মন্দিরা যদি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে সবরকম সহায়তা করা হবে।
সংসারের টানাপোড়েনের মধ্যেও মন্দিরার অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাঁকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাঁর স্বপ্ন—একদিন পড়াশোনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়া। সেই লক্ষ্যেই এগিয়েই চলেছেন তিনি।
মন্দিরার এই কাহিনী অনুপ্রাণিত করবে বহু বোর্ড পরীক্ষার্থীকে। শুধু পরীক্ষার্থীই নয়, জীবনে চলার পথে অনেকেই নানা বাধার সম্মুখীন হন। সেই সময় উদ্যম হারিয়ে ফেলেন। তাঁদেরও অনুপ্রেরণা জোগাবে মন্দিরার লড়াইয়ের এই কাহিনী।
সংবাদদাতাঃ দীপক দেবনাথ