উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার দণ্ডীর হাট বাজার সংলগ্ন একটি বেসরকারি নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারে ২৬ বছর বয়সী এক মহিলার রহস্যময় মৃত্যুকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতার নাম মরিয়ম খাতুন, যিনি দেগঙ্গা থানার ইয়াজপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মরিয়ম খাতুন বেড়াচাপার একটি বেসরকারি ব্যাংকে কাজ করতেন। পাশাপাশি, বসিরহাটের ওই নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বলে খবর। সোমবার সন্ধ্যার পর সেন্টারের দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে বসিরহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে এবং মরিয়মকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। দ্রুত তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মরিয়মের স্বামী আলমগীর মন্ডল জানিয়েছেন, সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মরিয়ম অফিসের কাজে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন। আলমগীরের অভিযোগ, 'বসিরহাটের যুবক আসাউদ্দিন মোল্লার সঙ্গে আমার স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল। সে-ই পরিকল্পনা করে আমার স্ত্রীকে খুন করেছে। মরিয়ম আত্মহত্যা করতে পারে না।'
অন্যদিকে অভিযুক্ত আসাউদ্দিন মোল্লা বলেন, 'ওই মহিলা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। আমি ওকে বুঝিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলি। কিন্তু সে দ্বিতল ঘরে উঠে দরজা বন্ধ করে দেয়। ডাকাডাকি করেও সাড়া না মেলায় পাশের এক কাঠমিস্ত্রির সাহায্যে দরজা ভেঙে মরিয়মকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই।'
পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে পৌঁছে মরিয়মের মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মরিয়মের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওই নার্সিং ট্রেনিং সেন্টারটি মাত্র এক মাস আগে খোলা হয়েছিল। তদন্তকারীরা মরিয়মের ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে শুরু করে পেশাগত জীবনের নানা দিক খতিয়ে দেখছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ঘটনাটি অত্যন্ত রহস্যজনক। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, 'প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে হলেও সমস্ত দিক থেকে তদন্ত চলছে।'