বাইরন বিশ্বাস। রাজ্য রাজনীতির এখন সবথেকে চর্চিত নাম। কারণ, কংগ্রেসের টিকিটে জেতার পর তিন মাস না কাটলেও সোমবারই তৃণমূলে যোগ দেন বাইরন। মুর্শিদাবাদে বিড়ি ব্যারন নামে পরিচিত এই বাইরনই কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন, তৃণমূল তাঁকে কিনতে পারবে না। উল্টে তিনিই তৃণমূল কংগ্রেসকে কিনে নেবেন। রাজ্যের শাসক দলের সম্পর্কে এই মন্তব্য সামনে আসার পর শোলগোর শুরু হয়। অনেকেই জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন, বাইরন বিশ্বাস ঠিক কত টাকার মালিক?
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হয় উপনির্বাচন। সেই ভোটে কংগ্রেসের টিকিটে সাগরদিঘি থেকে দাঁড়ান বাইরন। নির্বাচন কমিশনকে তিনি সম্পত্তির হলফনামা দেন তা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে বাইরন বিশ্বাসের সম্পত্তি ২০ কোটির টাকারও বেশি। তাঁর ধার রয়েছে ৩ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ব্যাঙ্কে তাঁর নগদের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ব্যাঙ্কে জমা টাকা ও সম্পত্তির পরিমাণ ২২ লাখের বেশি টাকা। শেয়ার, বন্ড বাবদ তাঁর সম্পত্তি ৫ কোটি টাকার বেশি। এলআইসিতেই তাঁর দেয় টাকার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৮৫ লাখ। এছাড়াও গাড়ি রয়েছে ৪৫ লাখ টাকা দামের।
জমিজমা ও বিল্ডিং রয়েছে ৫০ লাখ ও ১ কোটি ১৩ লাখ টাকারও বেশির। যে বাড়িতে থাকেন তার দাম ৭৫ লাখ টাকা।
জিৎ বিড়ি কোম্পানির মালিক বাইরন বিশ্বাস। উচ্চমাধ্যমিক পাশ বাইরন মাত্র ১৬ বছর বয়সে ব্যবসাতে যোগ দেন। তারপর এক এক করে কারখানা, স্কুল ইত্যাদিও তৈরি করেন। শোনা যায়, প্রথম থেকেই তৃণমূল ঘেঁষা ছিলেন বাইরন। তবে সাগরদিঘি ভোটে তিনি টিকিট পাননি শাসকদলের থেকে। এতে ক্ষুন্ন হন। সেই কারণেই নাকি কংগ্রেসের দলীয় প্রতীকে দাঁড়ান সাগরদিঘিতে। তারপরই চমক। এই সাগরদিঘি কেন্দ্র থেকেই ২০২১ সালের বিধানসভায় নির্বাচনে ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের সুব্রত সাহা। অথচ এবারের উপনির্বাচনে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে জেতেন বাইরন।
কেন বাইরন বলেছিলেন তৃণমূলকে কিনে নেবেন? উপনির্বাচনে জেতার পরই গুঞ্জন ওঠে বাইরনের তৃণমূলের যোগ দেওয়া সময়ের অপেক্ষা মাত্রা। কংগ্রেসের টিকিটে জিতলেও ঘাসফুসের হাতই ধরবেন তিনি। কিন্তু সেই সময়ই সাংবাদিকদের বাইরন বলেছিলেন, 'লিখে রেখে দিন, তৃণমূল আমাকে কিনতে পারবে না। দরকারে তৃণমূলকে কিনে নেব।'
সেই বাইরনই সোমবারই তৃণমূলে যোগ দিয়ে কার্যত উল্টো কথা বলেন। কেন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ? উত্তরে বাইরন বলেন,'আমি যে জিতেছি তাতে কংগ্রেসের কোনও অবদান ছিল না। আমি তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম। টিকিট পাইনি বলে কংগ্রেসে যাই। বরাবরই আমি তৃণমূলের লোক। আমি যদি বিশ্বাসঘাতকতা করি, সেই জবাব দেবেন জনগণ। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী দিনে তৃণমূলের টিকিটে আরও বেশি ভোটে জিতব। বিজেপিকে রুখতে গেলে একমাত্র মঞ্চ তৃণমূল।'