Belgachia News: বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ধসকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। সোমবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। অন্য়দিকে বিকেলে সেখানেই যেতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার সকালে সেখানে যান প্রদেশ কংগ্রেস শুভঙ্কর সরকার। তিনিও পুলিশি বাধার মুখে পড়েন।
পাইপ ফেটে ধসের ফলে স্থানীয় ১০০-রও বেশি বাসিন্দা পুনর্বাসনের দাবি করছেন। মঙ্গলবার তাঁদের নিয়ে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা বৈঠক করছেন। এদিকে উত্তর হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা পাইপ ফাটার পর থেকে জলশূন্য। ঘটনার ৬ দিন হতে চলল। এই পরিস্থিতির সুরাহা কীভাবে হবে?
KMDA সূত্রে খবর, মঙ্গলবার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বৈঠকে ডেকেছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। জল সরবরাহ দফতরের আধিকারিকরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন। ঠিক কোন পথে এগোলে দ্রুত এর সমাধান হবে, তাই নিয়ে আলোচনা হবে।
কতদিন সময় লাগতে পারে?
সোমবার ধস দেখতে গিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ৩ দিনের মধ্যে সুরাহার আশ্বাস দিয়েছিলেন। KMDA-র পুরানো ঠিকাদাররাও একই কথা বলছেন। তাঁদের কথা, 'এই মাপের কাজে অনেক সময় লাগে। ৩-৪ দিন তো লাগেই'। তার কারণও ব্যাখা করলেন। bangla.aajtak.in-কে এক ঠিকাদার জানালেন, এগুলি এমএস পাইপ। এর ব্যাস ৬ ফুটের। অর্থাৎ একজন মানুষ সোজা হয়ে এর মধ্যে হাঁটতে পারবে। ফলে পাইপ যে কত বড়, তা সহজেই অনুমেয়।
এই ধরনের পাইপে বিরল ক্ষেত্রে প্রচন্ড বেশি পরিমাণে জলের চাপ তৈরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে এমন ফেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। বেলগাছিয়াতেও ঠিক তাই হয়েছে। এমনিতেই ভাগাড়ে আবর্জনার ভারে মাটি নড়বড়ে ছিল। পাইপ ফাটতেই বিস্তীর্ণ স্থানজুড়ে ধস নামে।
এই জাতীয় পাইপ সারানোও কঠিন। ছোট পাইপের মতো ওয়াশার-জাতীয় ব্যবস্থা নয়। ফলে দুইটি পাইপের সংযোগের জন্য ওয়েল্ডিং করতে হয়। এত বড়-ভারী পাইপ সরিয়ে, নতুন অংশ আনা, তারপর সেটা ওয়েল্ডিং করা- সব মিলিয়ে বেশ সময়সাধ্য ব্যাপার।
তবে আরও একটি সমস্যা হল জল খালি করা। বড় পাইপে জলও ধরে প্রচুর। সেই জল খালি না করা পর্যন্ত কাজ করা যাবে না। আবার গোটা পাইপলাইন বন্ধ করাতেও সমস্যা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বিস্তীর্ণ এলাকায় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে হিতে বিপরীত হতে পারে।
কেএমডিএ-র ঠিকাদাররা বলছেন, বিগার্ডেনের কাছে জল তোলা হয়। সেই জল পদ্মপুকুরে আসে। পরিশুদ্ধ হওয়ার পর জল বিস্তীর্ণ এলাকায় সরবরাহ করা হয়। ফলে এর সমাধান বের করাই বেশ বড় চ্যালেঞ্জ।
এদিকে এই সবের মধ্যেই রয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ভাগাড় সাফাই করার দাবি। সব মিলিয়ে বেলগাছিয়ার পরিস্থিতি যে বেশ গুরুতর, তা বলাই যায়। আপাতত পাইপ জুড়ে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করাই প্রধান লক্ষ্য প্রশাসনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই কাজে এখনও অন্তত ৩-৪ দিন সময় লাগবে। তার আগে কোনওমতে সম্ভব নয়। আর সেই ক'দিন নির্দিষ্ট লাইনে জল বন্ধ রাখা ছাড়াও উপায় নেই। পৌরসভার গাড়িতে করে বিভিন্ন এলাকায় জল সরবরাহ হলেও, এত বেশি মানুষকে এভাবে জল দেওয়াও অসম্ভব। ফলে দ্রুত পাইপ সারানোর অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই উত্তর হাওড়ার হাজার-হাজার মানুষের।