কাঁচামালের অভাবে উলুবেড়িয়ার দীর্ঘদিনের শাটলকক শিল্প প্রায় লুপ্ত হতে বসেছিল। ইতিমধ্যেই কর্মহীন হয়ে পড়ছেন এই হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত সেখানকার কয়েক হাজার মানুষ। এবার এই শিল্পকে বাঁচাতে উদ্যোগী হল রাজ্য প্রাণিসম্পদ দফতর।
বাংলায় যে কয়েকটা ঐতিহ্যবাহী লাভজনক হস্তশিল্প আছে, তার মধ্যে হাওড়ার শাটলকক অনত্যম। একটা সময় উলুবেড়িয়ার প্রায় ঘরে ঘরে এই শিল্প গড়ে উঠেছিল। ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষের প্রধান জীবিকা হয়ে উঠেছিল। কিন্তু বছর খানেক ধরে এর প্রধান কাঁচামাল অর্থাৎ সাদা পালকের অভাবে শাটলকক শিল্প এখন চরম সঙ্কটের মুখে! তার উপর সাদা পালকের তৈরি শাটলককের জায়গায় বাজার দখল করেছে সস্তার প্লাস্টিকের শাটলকক। পর্যাপ্ত কাঁচামালের অভাব আর দাম— এই দুইয়ের সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে ক্রমশ বন্ধ হতে বসেছে উলুবেড়িয়ার শাটলকক শিল্প।
শাটলকক তৈরি করতে নিখুঁত মাপের সাদা হাঁসের পালকের প্রয়োজন হয়। এর সঙ্গে যুক্ত কারিগররা জানান, একটি হাঁস থেকে মোটামুটি ১৬-১৭টি নিখুঁত মাপের পালক পাওয়া যায়। এই শিল্পকে ফের চাঙ্গা করতে প্রতি মাসে মোটামুটি এমন ৪০ লক্ষ নিখুঁত পালকের প্রয়োজন। জোগান পর্যাপ্ত হলে পালকের তৈরি শাটলককের দাম আর গুনমানে প্লাস্টিকের শাটলকককে অনায়াসেই টেক্কা দেওয়া সম্ভব।
ইতিমধ্যেই এই শিল্পকে বাঁচাতে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরের কর্তারা উলুবেড়িয়ার চেম্বার অব কর্মাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একজোটে শাটলকক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। হরিণঘাটায় রাজ্য সরকারী ফার্ম হাউস থেকে সাদা হাঁসের পালকের জোগান দিয়ে প্রাথমিক ভাবে কাঁচামালের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। হরিণঘাটা সরকারী ফার্ম হাউস থেকে প্রতি মাসে মোটামুটি ১০ লক্ষ পালক পাওয়া যেতে পারে। বাকি প্রয়োজনীয় কাঁচামালের জোগানের জন্য পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা করবে প্রাণিসম্পদ দফতর।