চোপড়া কাণ্ডে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। যুবতীকে রাস্তায় ফেলে মারধরের ঘটনার নিন্দা হচ্ছে সর্বত্র। তবে চোপড়ার বিধায়ক এখনও বলছেন, সম্পর্কটা অবৈধ। ওই মহিলার সন্তান রয়েছে। তারপরও তিনি অন্য পুরুষের সম্পর্কে জড়িয়েছেন। 'আমার বিধানসভা ক্ষেত্রে ভবিষ্যতেও এমন ঘটনা ঘটলে দায়িত্ব কীভাবে নেব?' বলছেন চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান।
চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেন, 'যে ঘটনা ঘটেছে তা অন্য়ায়। তবে ওই মহিলা অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। ওই যুবতীর সন্তান আছে। স্বামী আছে। শ্বশুর বাড়ির লোকরাই মহিলাকে সহ্য করতে পারেন না। পুলিশ এটা নিয়ে পদক্ষেপ করবে মনে হয়।'
চোপড়াকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত তাজমুল তৃণমূলের নেতা বলে অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। তবে সেই দাবি মানতে নারাজ বিধায়ক হামিদুল। তিনি বলেন, 'চোপড়াতে সবাই তৃণমূল করে। তবে সে কোনও নেতা নয়। সমর্থক বা সাধারণ একজন ভোটার হতে পারে। আমি তাকে চিনি না। সে আমার ঘনিষ্ঠ নয়।'
স্থানীয় সূত্রে খবর, তাজমুলের বাড়বাড়ন্ত বিধায়ক হামিদুলের কারণেই। তবে চোপড়ায় মহিলাকে পেটানো হয়েছে সেই বিষয়ে তিনি জানতেন না বলেও দাবি করেন। ওই বিধায়ক বলেন, 'আমি জানতাম না এমন কোনও ঘটনা ঘটছে। ওটা মহিলার পরিবারের লোকরাই করিয়েছে।'
বিধায়ককে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি এমন ঘটনাকে সমর্থন করেন? উত্তরে হামিদুল জানান, তিনি সমর্থন করেন বা করেন না সেটা বিষয় নয়। তবে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে দেশে এমন ঘটনা ঘটেই চলেছে। মেয়েটার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও বলছে মহিলার একটা ছেলে আছে, মেয়েও আছে। সে ক্লাস ইলেভেনে পড়ে।' বিধায়ককে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না হয়, তাঁর দায়িত্ব কি তিনি নেবেন? উত্তরে হামিদুল রহমান বলেন, 'আমি কীভাবে দায়িত্ব নেব? ফের হবে কি না সেটা জানা সম্ভব নয়। গোটা দেশেই তো চলছে। তবে পুলিশ এখন ব্যবস্থা নিচ্ছে।'
প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুরে একটি ভিডিও সামনে আসে। সেখানে দেখা যায়, অভিযুক্ত তাজমুল যুবক ও যুবতীকে রাস্তায় ফেলে মার মারছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর. স্থানীয় বিধায়ক হামিদুলের ডানহাত এই তাজমুল। এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জেল থেকে কয়েকদিন আগেই জামিনে মুক্ত হয়ে গ্রামে ফেরে সে। ফের দৌরাত্ম্য শুরু হয় জেসিবি ওরফে তাজমুল হকের। এলাকার বাসিন্দারা জানান, এলাকায় তোলাবাজি করত জেসিবি। নতুন বাড়ি নির্মাণ থেকে হাটে ধান, ভুট্টা বিক্রির পর ব্যবসায়ীদের ‘তোলা’ দিতে হয় তাকে। যেকারণে জেসিবি সালিশি সভায় তালিবানি কায়দায় নির্মম অত্যাচার করলেও প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেননি কেউই।
এদিকে পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে চোপড়া কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল নেতা তাজমুল হককে। রবিবার তাকে গ্রেফতার করে চোপড়া থানার পুলিশ। এদিন আদালতে তুলে তাকে হেফাজতে পাওয়ার জন্য আবেদন জানায় পুলিশ। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। রবিবার বিকেলের পরেই ইসলামপুরের পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে গ্রেফতার করে তৃণমূল নেতা তাজমুলকে। ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জবি থমাস জানান, যে ঘটনার প্রেক্ষিতে রবিবার চোপড়ার ওই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটি দিন দুয়েক আগে চোপড়ার লক্ষ্মীপুরে ঘটেছিল। রবিবার ঘটনার ভিডিও সামনে আসে।