বাবরি মসজিদের পাল্টা রাম মন্দির। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ(Murshidabad Babri Masjid) গড়বেন বলে হইচই ফেলে দিয়েছেন হুমায়ুন কবীর। এবার তৃণমূল বিধায়কের পাল্টা বার্তা দিল গেরুয়া শিবির। মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ জেলা সভাপতি শত্রুভ সরকার জানালেন, শীঘ্রই রাম মন্দির উদ্বোধন করা হবে(Murshidabad Ram Mandir)। এর মধ্যেই ৪টি সম্ভাব্য জমিও দেখা হয়ে গিয়েছে বলে জানান। সব মিলিয়ে মুর্শিদাবাদই যেন বাংলার অযোধ্যায় পরিণত হচ্ছে। মন্দির-মসজিদ-মুর্শিদাবাদই এখন খবরের শিরোনামে।
৪টি জায়গায় জমি দেখা হয়েছে
বিজেপি নেতা শত্রুভ সরকারের কথায়, ৪টি জমি দেখা হয়েছে। আরও আলোচনা এবং সমস্ত দিক খতিয়ে জমি ফাইনাল করা হবে। এখনও পর্যন্ত কোথায় রামমন্দির হবে, তাই নিয়ে কিছু চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
কবে নাগাদ মুর্শিদাবাদে রাম মন্দির তৈরির কাজ শেষ হবে?
শক্রভ সরকারের কথায়, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যেই সমস্ত প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হবে। ২০২৫-এর ২২ জানুয়ারি এর উদ্বোধন করা হবে বলে জানান তিনি।
বাবরি মসজিদের পাল্টা?
যদিও মুর্শিদাবাদের বিজেপি নেতৃত্ব এটাকে সরাসরি হুমায়ুনের পাল্টা চাল বলে মানতে নাপাদ। সাংবাদিক সম্মেলনে শত্রুভ সরকার কটাক্ষ করে বলেন, 'এটি বাবরি মসজিদ হতে পারে না। এটি হুমায়ুন মসজিদ হতে পারে।' তাঁর কথায়, সর্বত্র রাম মন্দির আছে। তাই মুর্শিদাবাদেও রাম মন্দির তৈরি করা দরকার।
আগামী ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে রাম মন্দির ও বাবরি মসজিদের এই ইস্যু রাজনৈতিক সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
১. ধর্মীয় মেরুকরণ:
মুর্শিদাবাদ একটি সংখ্যালঘু জেলা। বাবরি মসজিদ ও রাম মন্দির নিয়ে সরগরম পরিস্থিতি তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র তৈরি করবে। বিজেপি ধর্মীয় ইস্যুতে ভোট ব্যাঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা করবে, এদিকে তৃণমূল ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা দিয়ে সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখতে চাইবে।
২. বিজেপির রণকৌশল:
রাম মন্দির নির্মাণের উদ্যোগ বিজেপিকে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় প্রবেশের সুযোগ করে দিতে পারে। স্থানীয় স্তরে এই ধরনের ইস্যু বিজেপির কর্মীদের উজ্জীবিত করবে এবং হিন্দু ভোট ব্যাঙ্ক সংহত করতে সাহায্য করবে।
৩. তৃণমূলের কৌশল:
হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদ পুনর্নির্মাণের দাবি তৃণমূলের সংখ্যালঘু সমর্থন ধরে রাখতে পারে। তবে এই ইস্যুতে মেরুকরণের কারণে তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৪. স্থানীয় রাজনীতির গুরুত্ব বৃদ্ধি:
মুর্শিদাবাদে এই ইস্যুতে উত্তেজনা বাড়লে, তা রাজ্যজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসতে পারে। স্থানীয় ইস্যুগুলিকে সামনে রেখে বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়ই প্রচার চালাবে, যা সরাসরি নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে।
সবমিলিয়ে, রাম মন্দির ও বাবরি মসজিদের ইস্যু পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ধর্মীয় মেরুকরণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রচারের অন্যতম প্রধান বিষয় হয়ে উঠতে পারে এই মন্দির-মসজিদ।