পশ্চিমবঙ্গে ৬টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতির নাম ঘোষণা করে দিল BJP। ২০২৬ সালের ভোট মাথায় রেখে জেলার সংগঠনে জোর দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। ৪ জেলায় নতুন মুখ আনা হল। সূত্রের খবর, এই ৪ জনই আরএসএস ঘনিষ্ঠ।
উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ নদিয়া, যাদবপুর, মথুরাপুর, ঝাড়গ্রাম, কাটোয়া -- এই ৬টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতির মধ্যে যাদবপুর, মথুরাপুর ও ঝাড়গ্রামে পুরনো মুখেই ভরসা রাখল বিজেপি। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সংগঠন ঢেলে সাজাতে তৎপর বঙ্গ বিজেপি। নতুন দায়িত্ব পেলেন উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ নদিয়া, মথুরাপুর এবং কাটোয়ার সভাপতি। তবে ঝাড়গ্রাম ও যাদবপুরে পুরনো সভাপতির ওপরেই আস্থা রেখেছে দল।
অধিকাংশ নতুন সভাপতিই সঙ্ঘপন্থী
উত্তর দিনাজপুরে নতুন জেলা সভাপতি হলেন নিমাই কবিরাজ, দক্ষিণ নদিয়ায় অপর্ণা নন্দী, মথুরাপুরে নবেন্দুসুন্দর নস্কর এবং কাটোয়ায় স্মৃতিকণা বসু। অন্যদিকে, ঝাড়গ্রামে তুফান মাহাতো এবং যাদবপুরে মনোরঞ্জন জোদ্দার আগের পদেই বহাল থাকলেন। এই নিয়ে মোট ৩৯টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতির নাম ঘোষণা করল বিজেপি। এর মধ্যে ২৮ জনই নতুন মুখ। প্রথম দফায় ২৫টি জেলার মধ্যে ১৭টি জেলায় বদল হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় ৮টি জেলার মধ্যে ৭টিতে এসেছিলেন নতুন সভাপতি। সংগঠন সূত্রে খবর, অধিকাংশ নতুন সভাপতিই সঙ্ঘপন্থী এবং নীচুতলার সংগঠন থেকে উঠে আসা।
আরও ৪টি জেলার সভাপতির নাম ঘোষণা
তবে রাজ্য বিজেপি সভাপতির পদে এখনও কোনও নাম ঘোষণা হয়নি। এই বিলম্ব ঘিরেই শুরু হয়েছে জল্পনা। সূত্রের খবর, আরও ৪টি জেলার সভাপতির নাম ঘোষণার পরেই রাজ্য সভাপতির নাম জানানো হতে পারে। রাজ্দলের 'এক ব্যক্তি, এক পদ' নীতি মেনে চললে সুকান্ত মজুমদার এই পদে থাকতে পারেন না, কারণ তিনি বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। এদিকে বিধানসভা ভোটের আর মাত্র এক বছর বাকি। ফলে এখন নতুন মুখ আনা হবে নাকি অভিজ্ঞ কাউকে দলে রাখা হবে—তা নিয়েও দলীয় মহলে জোর চর্চা চলছে।
নতুন সভাপতির খোঁজে সময় নিচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
বিজেপির একাংশের মতে, নতুন সভাপতির খোঁজে সময় নিচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অন্যদিকে, কিছু জেলার ক্ষেত্রে এখনও ঐকমত্য গড়ে না ওঠায় নাম ঘোষণা আটকে রয়েছে। ব্যারাকপুর, বনগাঁ, দার্জিলিঙের মতো জেলাগুলিতে এখনও মনোনয়ন জমা পড়েনি বলেও জানা গিয়েছে। রাজ্য বিজেপি সূত্রে দাবি, বিধানসভা ভোটের আগে জেলা সংগঠনগুলিকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাতেই এই রদবদল। দলের পুরনো ও অভিজ্ঞ কর্মীদের ফের দায়িত্ব দিয়ে একপ্রকার ‘ঘরের লোকেই ভরসা’ রাখার চেষ্টা চলছে। দলীয় সূত্র আরও বলছে, এবার জেলা সভাপতিরা শুধুই সাংগঠনিক দায়িত্ব নয়, ভোটের জন্য ময়দানে সক্রিয়ভাবে কাজ করবেন।
সবমিলিয়ে রাজ্য বিজেপিতে নেতৃত্বের রদবদল এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। জেলা সভাপতি ঘোষণার কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু রাজ্য সভাপতি পদে নতুন মুখ আসবে কি না, সেই প্রশ্নের জবাবের দিকেই তাকিয়ে গেরুয়া শিবির।