অবশেষে পূর্ণতা পেল এক দশকের অপেক্ষা। মঙ্গলবার বীরভূমের ইলামবাজার থেকে অজয় নদীর উপর তৈরি হওয়া বহু প্রতীক্ষিত সেতুর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা চান সেতুর নাম হোক, ‘জয়দেব সেতু’। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়েছে বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে।
স্থানীয়দের কথায়, এতদিন অস্থায়ী হিউম পাইপ বা বোল্ডার দিয়ে তৈরি সেতু দিয়েই চলাচল করতে হত। বর্ষাকালে সেগুলি ভেসে গেলে ভরসা ছিল কেবল নৌকা। কিন্তু অজয় নদী ফুলে ফেঁপে উঠলে তা-ও বন্ধ হয়ে যেত। ফলে স্কুলপড়ুয়া থেকে শুরু করে রোগী কিংবা কর্মজীবী মানুষ – সকলের যাতায়াতে দুর্ভোগের শেষ ছিল না।
এবার ২.৭৩ কিমি দীর্ঘ এই পাকা সেতু চালু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন মসৃণ হবে, তেমনই দুর্ঘটনার আশঙ্কাও অনেকটাই কমবে বলে জানাচ্ছেন এলাকাবাসী। জয়দেব কেঁদুলির মেলায় যাওয়ার সময় অস্থায়ী সেতুতে বহু দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে অতীতে। এখন সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হল।
সেতুটি চালু হলে ইলামবাজারের টিকরবেতা থেকে শিবপুর পর্যন্ত সংযোগ আরও সহজ হবে। ফলে দুর্গাপুর, মুচিপাড়া হয়ে শান্তিনিকেতনে যাওয়ার রাস্তা প্রায় ২২-২৫ কিলোমিটার কমে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে। এর ফলে সময় এবং জ্বালানি দুটোই বাঁচবে। একইসঙ্গে এলাকাজুড়ে ব্যবসা, পর্যটন ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও গতি আসবে বলেই আশা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে মুখ্যমন্ত্রী কাঁকসার এক সরকারি সভা থেকে এই সেতু তৈরির ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জমি সংক্রান্ত জটিলতা ও একাধিকবার বন্যার কারণে নির্মাণকাজে দেরি হয়। এমনকি একবার বন্যার জলে নির্মাণসামগ্রীও ভেসে যায়। সব বাধা পেরিয়ে অবশেষে উদ্বোধন হল এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুর। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, 'এটা শুধু সেতু নয়, আমাদের স্বপ্নপূরণ। এবার শান্তিনিকেতন আমাদের অনেক কাছেই।'