সন্দেশখালিতে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন-পরবর্তী হিংসায় তিন বিজেপি কর্মীর হত্যার ঘটনায় সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। সিবিআই জানিয়েছে, প্রধান অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত পরিচালনা করতে হবে এবং একজন যুগ্ম পরিচালকের তত্ত্বাবধানে বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠনেরও নির্দেশ দেন। আদালতের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট বলা হয়েছে, রাজ্য পুলিশ এই মামলায় বারবার ব্যর্থ হয়েছে এবং ন্যায়বিচার ব্যাহত হয়েছে।
২০১৯ সালের ওই ঘটনায় বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডল, দেবদাস মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডল সন্দেশখালির নিজ গ্রামে হামলার পর মৃত অবস্থায় পাওয়া যান। অভিযোগ, শাহজাহান শেখের নেতৃত্বে একদল লোক তাদের উপর হামলা চালায়।
প্রথমে মামলার তদন্ত করছিল রাজ্য পুলিশের সিআইডি শাখা। কিন্তু নিহতদের পরিবারের দাবি অনুযায়ী, তদন্ত সঠিকভাবে না হওয়ায় তারা সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে যান।
২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি ইডি-র ওপর হামলার ঘটনায় শাহজাহান শেখ গ্রেফতার হন। তখন থেকে তিনি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। উল্লেখ্য, ওই হামলা হয়েছিল একটি বহু কোটি টাকার রেশন দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে ইডি-র দল শাহজাহানের সন্দেশখালির বাড়িতে পৌঁছালে।
সন্দেশখালির বহু মহিলা শাহজাহান এবং তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে জমি দখল ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগও তুলেছেন। বিষয়টি তীব্র রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দেয়।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেই রাজ্য পুলিশের ভূমিকায় পক্ষপাত দেখা যায়, যা ইডি-র উপর হামলার মামলাতেও লক্ষ্য করা গেছে। তাই এই গুরুতর অভিযোগের তদন্ত সিবিআই-এর মতো নিরপেক্ষ সংস্থার দ্বারাই হওয়া উচিত।
বর্তমানে ইডি শাহজাহানের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলার তদন্ত করছে, যার মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার ওপর হামলা এবং রেশন দুর্নীতির অভিযোগ। এখন সিবিআই তদন্তের মাধ্যমে ২০১৯ সালের হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত চিত্র সামনে আসার অপেক্ষায় গোটা রাজ্য।