বর্ষা এলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলবন্দি জীবনে নিত্য দুর্ভোগের শিকার হতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকা এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য বহু আগে ঘোষিত হয়েছিল ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। সেই প্রসঙ্গেই ফের একবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এত বড় প্রজেক্ট করতে সময় লাগবেই। কিন্তু আমরাই করব। কেন্দ্র এক পয়সাও দিচ্ছে না। আমরা নিজেরাই মাস্টারপ্ল্যানের কাজ করছি।'
ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন)-র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, 'ডিভিসি না জানিয়ে জল ছেড়ে দিচ্ছে। আগে জল ছাড়ার আগে রাজ্যকে জানানো হত, কিন্তু এখন কেন্দ্রের সরকার এই নিয়ম মানে না। তারা বাংলাকে বন্যাত্রাণেও সাহায্য করে না।'
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান কার্যকর করতে গিয়ে জমি সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলে তা পাশ কাটিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষের কোনও অসুবিধা না হয়।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, 'তিস্তা নদীর উপর ১৪টি হাইড্রাল প্রজেক্ট তৈরি করে শ্বাসরোধ করা হয়েছে। আমরা বারবার বলেছি ইন্দো-ভুটান নদী প্রকল্পে বাংলার প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত। কিন্তু কেন্দ্র রাজ্যকে পুরোপুরি বাদ দিয়েছে।'
ডিভিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, 'ওরা কোনও ড্রেজিং করে না, পলি সংস্কার করে না। ফলে জলধারণ ক্ষমতা অনেক কমে গিয়েছে। এতে বন্যার ঝুঁকি আরও বেড়েছে।'
উল্লেখ্য, ২০১৪, ২০১৯ এবং ২০২৪— এই তিনটি লোকসভা নির্বাচনের সময়েই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম ভোটের প্রতিশ্রুতি। ২০২৪ সালের নির্বাচনের মুখে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, কেন্দ্র টাকা না দিলেও রাজ্য নিজস্ব অর্থে কাজ করবে। সেই মতো ২০২৫ সালের রাজ্য বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে।