ভারতে ৫ বছরে নথিভুক্ত বাল্য বিবাহের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। দেশে ২২ কোটিরও বেশি বধূর বয়স ১৮ বছরের কম। এছাড়া ভারতে রোজ ৩৫ জন মহিলাকে উদ্ধার করা হয়, যাঁদের বিয়ের জন্য অপহরণ করা হয়েছিল। এই ৩ তথ্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে আজও দেশে কতোটা পরিমানে চলছে বাল্য বিবাহ। দেশে মেয়েদের আইনত বিয়ের বয়স ১৮ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে তা ২১। যদিও বিভিন্ন ধর্মের নিজস্ব আইনে অবশ্য এই নিয়মে কিছু হেরফের রয়েছে।
এই সংক্রান্ত আইন
যুগ যুগ ধরে ভারতে চলে আসছে বাল্য বিবাহ। স্বাধীনতার আগে দেশে এই সংক্রান্ত একটি আইন তৈরি করা হয়। যেখানে বিয়ের জন্য ছেলেদের নূন্যতম বয়স ১৮ এবং মেয়েদের ১৪ নির্ধারণ করা হয়। পরে ১৯৭৮ সালে আইনটি সংশোধন করা হয়। সংশোধিত আইনে বিয়ের জন্য ছেলেদের নূন্যতম বয়স নির্ধারণ করা হয় ২১ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮। ২০০৬ সালে আইনটি আবারও সংশোধন করা হয়। সেই আইনে বাল্য বিবাহকে জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে মান্যতা দেওয়া হয়। আই আইনে বলা হয়েছে, যে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন বাল্য বিবাহ ঠেকাতে আদালতের থেকে নির্দেশ নিতে পারেন। আর যদি তারপরেও তা হল, তবে তার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির ২ বছর পর্যন্ত জেল এবং ১ লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে। এমনকী যদি বিয়ে হয়েও যায়, তাহলেও সেটি বৈধ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না। তবে এই আইনটিও সংশোধনের জন্য বিল আনা হয়েছে। সেটি এখন সংসদীয় কমিটির কাছে রয়েছে। নয়া বিলে মেয়েদের বিয়ের নূন্যতম বয়স ২১ করার কথা বলা হয়েছে।
পরিসংখ্যান
দেশের ৭০ শতাংশেরও বেশি মানুষ গ্রামে বসবাস করেন। আর গ্রামে এই 'কুপ্রথা' আজও চলে আসছে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে দেশে সেইসময় ৬৯.৫ লক্ষ এমন পুরুষ এবং ৫১.৬ লক্ষ এমন মহিলা ছিলেন যাঁদের বিয়ে নির্ধারিত বয়সের আগেই হয়ে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে দেশে যে সমস্ত মহিলার বিয়ে হয়েছে তাঁদের মধ্যে ১.৯ শতাংশের বিয়ে ১৮ বছরের আগেই হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি ২৮ শতাংশের বিয়ে হয়েছে ১৮-২০ বছরের মধ্যে।
এই প্রসঙ্গে ৩ বছর আগে ইউনিসেফের একটি রিপোর্টে বলা হয়, ভারতে অর্ধেকের বেশি বালিকা বধূ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশের। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী উত্তর প্রদেশে বালিকা বধূর সংখ্যা ৩.৬ কোটি, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে ২.২ কোটি, মহারাষ্ট্রে ২ কোটি এবং মধ্যপ্রদেশে ১.৬ কোটি।
আরও পড়ুন - KBC-র হট সিটে প্রথমবার আন্দামান-নিকোবরের বাসিন্দা, কী বললেন বচ্চন?